বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম :
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ১৫ এপ্রিল মোল্লারহাট বাজারের পাশে নদের পাড়ে এলাকাবাসীর মানববন্ধন।বর্ষার আগেই ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নবাসী। তিন কিলোমিটার এলাকায় অব্যাহত ভাঙনে ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারসহ পার্শ্ববতী কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ আবাদি জমি নদে বিলীন হচ্ছে।
এদিকে এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ১৫ এপ্রিল মোল্লারহাট বাজারের কড্ডারমোড়ে নদের পাড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।কয়েক দিন ধরে পানি বাড়ায় ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙনে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবা, চিতলিয়া, শেখ পালানু, পূর্ব দুর্গাপুর গ্রাম ও মোল্লারহাট এলাকার পার্শ্ববর্তী পাঁচটি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে নদে চলে গেছে ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট বাজারের অর্ধেকেরও বেশি অংশ। প্রতিদিনই ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে গাছপালাসহ ফসলি জমি। হুমকিতে পড়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ইউনিয়নের উত্তর বালাডোবা গ্রামের আব্দুস সামাদ ও হাবিবুর রহমানের বসতভিটার অর্ধেক নদে চলে গেছে। বাকি অর্ধেক ভিটায় একটি করে ঘরে পরিবার নিয়ে বাস করছেন তাঁরা।
হাবিবুর রহমান বলেন,ব্রহ্মপুত্র নদে পাঁচবার তাঁর বসতভিটা ভেঙেছে। এবারও নদের ভাঙনের কবলে পড়ে একটি ঘরের বেড়া,-চাল খুলে সরিয়ে অন্যের জায়গায় রেখেছেন। দু-একদিনের মধ্যে বাকি ঘরও সরাতে হবে। কিন্তু ভিটেমাটি চলে গেলে কোথায় নেবেন তিনি। পার্শ্ববতী ভোগলের কুটি গ্রামের মরিয়ম বেগমের অবস্থা একই। ইউনিয়নের কড্ডার মোড় এলাকার চায়না বেগম ও আসাম উদ্দিন জানায়, ‘প্রতিবছরই আশ্বাস শুনি সরকার নদে বাঁধ দেবে, কিন্তু দেয় না। এখন বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় মানুষের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে আছি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছি না।’
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন,যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে এটি রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অল্প মোল্লারহাটসহ প্রায় তিন কিলোমিটারের বেশি এলাকার বিভিন্ন স্থান নদের গর্ভে চলে যাবে।’
বেগমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবলু মিয়া জানান, ‘ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি এলাকাবাসীকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান,‘বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকায় নদে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।’