বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আলমগীর হোসেন আসিফ,ফুলবাড়ী কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চৈত্রের শুরু থেকেই হচ্ছে বৃষ্টি। যা জ্যৈষ্ঠেও চলমান। আর এক নাগাড়ে বৃষ্টির বিরূপ প্রভাব পড়েছে সবজি সহ ধান, পাট ও ভুট্টা চাষাবাদে। টানা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে করলা, বেগুন, মরিচ, মিস্টি কুমড়া ক্ষেতের সবজি। চলতি বোরো মৌসুমে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না চাষিরা। একই অবস্থা ভুট্টা চাষিদের। আর টানা বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে চলতি মৌসুমে পাট চাষাবাদ। কৃষকের সাথে যেন শুরু হয়েছে প্রাকৃতিক বৈরীতা। এরই মাঝে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যুও হয়েছে এক কৃষি শ্রমিকের। সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতায় ভালো নেই ফুলবাড়ীর কৃষক।
ধান চাষাবাদ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার কৃষকদের নিয়ে ফুলবাড়ীর চারণ কবি আজিজুল হাকিম মন্ডল লিখেছেন –
ঘরে ধান ক্ষেতে ধান
ধান রাস্তা ঘাটে,
ধান পঁচে সাবার হলো
মরলো কৃষক মাঠে।।
ধানের দিকে তাকালে
নয়ন জলে ভরে,
ঘরে ঘরে কাঁদছে সবাই
বুঝি থাকবো অনাহারে।।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কবির লেখা কবিতার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, প্রায় সব জমির ধান পেকে গেছে। একসাথে সবার জমির ধান পাকায় ধান কাটা শ্রমিক নিয়ে শুরু হয়েছে টানাটানি। আর দিনের বেশির ভাগ সময় বৃষ্টি হওয়াতে বিপাকে পড়েছেন ধান চাষিরা। ধান কেটে বাড়িতে এনে কেউ কেউ স্তুপ করে রেখেছেন। বৃষ্টি কারণে মাড়াই করে নিতে পারছেন না। কেউ মাড়াই করে নিতে পারলেও সেই ধান শুকাতে পারছেন না। ধান পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যেসব জমির ধান এখনও কাটা হয়নি সেসব ক্ষেতেই ধানে চারা গজাতে শুরু করেছে। ধান নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে চাষিদের।
ধান চাষিদের পাশাপাশি ভুট্টা চাষিদেরও কপালে চিন্তার ভাঁজ। জমির ভুট্টা ঘরে তোলার সময় হলেও বৃষ্টির কারণে ভুট্টা ঘরে তুলতে পারছেন না চাষিরা। ক্ষেতেই অনেকের ভুট্টায় পঁচন ধরতে শুরু করেছে। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রমে উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে না পাওয়া চরম হতাশা কৃষকদের চোখে মুখে। এ যেন তীরে এসে তরী ডোবার মতই অবস্থা। এদিকে ধান ও ভুট্টা চাষিদের মতই প্রাকৃতিক প্রতিকূলতায় ভালো নেই পাট চাষিরাও। হাজারো স্বপ্ন নিয়ে সোনালি আঁশ খ্যাত পাট চাষাবাদের শুরু থেকেই বৃষ্টি বাঁধিয়েছে বিপত্তি। দফায় দফায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে অনেকের পাট ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরেও যেসব পাটক্ষেত এখনো টিকে আছে বৃষ্টির কারণে চাষিরা ক্ষেতের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে পারছেন না। ফলে চাষাবাদের শুরুতেই পাটের ফলন নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি ইরি – বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ২১৫ হেক্টর জমির ধান ও রবি মৌসুমে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা ভুট্টার ফসল ঘরে তোলার সময় হয়েছে। এছাড়া ৫২০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে কৃষকেরা তোষা পাট চাষাবাদ করছেন।