মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
কলকাতার আনন্দবাজার সূত্রে জানা যায়, গত দুই-তিন দিন ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন টালিউডের প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee Passes Away). মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর ৷
জানা যায় বুধবার (২৩ মার্চ) প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় একটি চ্যানেলের অনুষ্ঠানের শুটিং করছিলেন। সেখানেই হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । বেশ কয়েকবার বমিও করেন। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তিতে করাতে চাইলে তিনি রাজি হননি। তবে তিনি বাড়ি ফিরে চিকিৎসা করাতে চান। বাড়িতে তখন স্যালাইনের ব্যবস্থা করা হয় ৷ এতরাতে তাঁকে আর হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়নি। বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা শুরু হলেও তিনি জীবনযুদ্ধে তিনি আর বিজয়ী হতে পারেননি। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ভোরে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে নিজের ফ্ল্যাটে হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।তিনি রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে।
নব্বইয়ের দশকে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা ছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তিনি প্রতিভাশালী অভিনেতা উৎপল দত্ত ও সন্ধ্যা রায়, শতাব্দী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মতো প্রতিভাশালী অভিনেতাদের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন। তাপস পাল, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের মতো তাঁরও একসময় নাম ডাক ছিল।একাধিক জনপ্রিয় বাংলা চলচ্চিত্রে ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন প্রয়াত এই অভিনেতা ৷
১৯৮৬ সালে তরুণ মজুমদারের ছবি ‘পথভোলা’ দিয়ে সিনেমায় যাত্রা শুরু। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল, ‘দহন’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘মধুর মিলন’ , ‘মায়ের আঁচল’, মায়ার বাঁধন, জয়বাবা ভোলানাথ, গীত সংগীত, সুজন সখী ‘আলো’,’নীলাচলে কিরীটি’। একাধিক ছবিতে সাফল্য পেলেও, নায়ক থেকে একসময় পার্শ্বনায়কের চরিত্রেই বেশি দেখা যেত অভিষেককে। মাঝে দীর্ঘ সময় টলিউড থেকে অনুপস্থিতও ছিলেন তিনি। সেই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কয়েক বছর আগে আক্ষেপের সুর ধরা পড়ে তাঁর গলায়। প্রথম সারির অভিনেতা হয়েও বঞ্চনার শিকার হতে বলে অভিযোগ করেন। জানান, একের পর এক ছবি থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল তাঁকে, তা-ও টলিউডের রাজনীতির জন্য। সেই সময় যাত্রা, মাচা করে সংসার চালাতে হয় তাঁকে। তিনি শুধু বড় পর্দা নয় ছোট পর্দাতেও তিনি সমানভাবে সাবলীল অভিনয় করে দর্শকদের বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে অভিনেতার সবথেকে বড় পরিচয় হয়ে উঠেছিল গুনগুনের বাবা হিসেবে। ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে নায়িকা চরিত্র গুনগুনের বাবা ডাক্তার কৌশিক বাবুর চরিত্রে অভিনয় করছিলেন তিনি । সকালেই তাঁর বাড়িতে হাজির হন ধারাবাহিকে তাঁর বেশ কয়েকজন সহ-অভিনেতা । সকলেই এই খবর পেয়ে স্তম্ভিত, শোকস্তব্ধ । এত কম বয়সে তাঁর চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই । এর আগে ‘টাপুর টুপুর’, ‘মোহর’, ‘অন্দরমহল’সহ একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি । তাঁর পরিবার হারাল প্রিয়জনকে, টলিউড হারাল আরও এক সম্পদকে। অভিনেতার অকালপ্রয়াণে টলিউডসহ সকলেই শোকস্তব্ধ। অভিনেতাকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন টলিপাড়ার অনেকেই । আজই হয়তো প্রয়াত অভিনেতার শেষকৃত্য হবে ।