মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুর:
রংপুরে স্বামীর চাহিদা মতো বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা না আনায় মৌসুমী আক্তার নামের এক গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধুর স্বামী নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধুর শশুড়, শাশুড়ি ও দেবরকেও আসামী করা হয়।
আদালত, পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের দক্ষিণ হাজীপুর মাঝাপাড়া গ্রামের খাদিমুল ইসলামের মেয়ে মৌসুমী আক্তারের (২৫) সঙ্গে একই উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কিসামত মেনানগর গ্রামের মজির উদ্দিনের ছেলে মো. নুরুজ্জামানের (২৮) এর মধ্যে দুই বছর আগে ঘটকের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তখন যৌতুক হিসেবে হিসেবে দেড় লাখ টাকা ও ঘরের আসবাবপত্র দাবি করে ছেলের পরিবার। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের সময়ই তা পরিশোধ করে মেয়ের বাবা খাদিমুল ইসলাম। কিন্তু বিয়ের ৬ মাস না পেরোতেই যৌতুকের জন্য আরও দুই লাখ টাকা আনার চাপ দেয়া শুরু করেন নুরুজ্জামান। এতে মৌসুমী অস্বীকৃতি জানালে করা হতো নির্যাতন। সবশেষ গত শনিবার ব্যবসা করার জন্য মৌসুমীকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ দুই লাখ টাকা আনতে বলেন তাঁর স্বামী। এতে মৌসুমী রাজি না হলে তাকে বেদম মারপিট করেন নুরুজ্জামান। এতে সহায়তা করেন দেবর, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন মৌসুমীকে উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।এরপর রোববার রাতে মৌসুমী বাদি হয়ে তারাগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে স্বামী নুরুজ্জামান, দেবর, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে। সোমবার সকালে নুরুজ্জামানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।নির্যাতনের শিকার গৃহবধু মৌসুমী আক্তার বলেন, বিয়ের সময় বাবা স্বামীকে দেড় লাখ নগদ টাকা আর ঘরের আসবাবপত্র দেয়। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই আরও দুই লাখ টাকা আনতে চাপ দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় প্রায় মারপিট করে। শনিবার সকালে তো মেরেই ফেলত। আল্লাহ সহায় ছিল জন্য বেঁচে গেছি। স্বামী ছাড়াও তার পরিবারের লোকজনও মারধোর করেছে।
এদিকে স্বামী নুরুজ্জামান বলেন, সামান্য বিষয়ে কথাকাটাকাটি হওয়ায় একটু থাপ্পর মেরেছি। এটা ভুল বোঝাবুঝি।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেন, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ থানায় আসার সঙ্গে সঙ্গে মামলা নথিভূক্ত করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।