শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এম আর রাসেল হোসাইন , পাবনা।
পাবনা শহরের প্রেসক্লাব গলিতে অবস্থিত ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-১-এ অভিযান চালিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। এসময় অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার সময় ৫ জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) শহরের প্রাণকেন্দ্র সোনাপট্টির প্রেসক্লাব গলির রানা শপিং কমপ্লেক্সে অবস্তিত ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-১-এ এই অভিযান চালানো হয়েছে। আটককৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি ডিবি। এই রানা শপিং কমপ্লেক্সে দেশের নামী-দামী প্রায় ১০/১৫টি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এর পাবনা অফিস ও স্থানীয় ৮টি পত্রিকার অফিস অবস্থিত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সেখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় -এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এসময় অনৈতিক কাজের সময় ৫ জন মেয়ে ও ৫ ছেলে মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। তাদেরকে পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযানের সময় হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে। অনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়রোধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। পাবনার আবাসিক হোটেলগুলো যেন অনৈতিক কাজের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। শহরের বেশিরভাগ হোটেলেই ঘণ্টা প্রতি উচ্চমূল্যে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া দিয়ে চলছে এসব ব্যবসা। এতে খুব সহজেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা। এছাড়াও পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকরাও সহজেই অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
অভিযান নিয়ে হোটেলের আশপাশের ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সোনাপট্টি এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্বাস করুন- এই অভিযান নিয়ে এখানকার ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ খুশি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এর আগে অনেকবার এখানে প্রশাসনকে ঢুকতে দেখেছি, কিন্তু কাউকে আটক না করেই চলে যেতে দেখিছি। এইবার প্রথম কাউকে আটক করা হলো। মনে হয় এই কিছু একটা হবে। এই জন্য আমাদের পুলিশ সুপারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আর ইভিনিং টার্চ ১ এর ৩য় ও ৪র্থ তলা মিডিয়া পল্লি হওয়ায় আমার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদও করতে পারি না। কারন সাংবাদিকগণ যথন দেখেও না দেখার ভান করে, তখন আমরা বুঝতে পারি তারাও ম্যানেজ। তা না হলে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তারা নিউজ করে না কেন? এজন্য সাধারন ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। এছাড়া ইভিনিং টার্চ এর পাশের বিল্ডিংএ পাবনা প্রেসক্লাব অবস্থিত। সেখানকার সাংবাদিকরাও এসব অপকর্মের কোন সংবাদ পরিবেশন করে না। তাই আমরা সাধারন মানুষ অসহায় আতংকিত।
প্রেসক্লাব গলির আরেক ব্যবসায়ী বলেন, সাংবাদিকদের সামনে দিয়ে যে পরিমাণে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা এখানে আসা-যাওয়া করে তাতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের জন্য কষ্টকর। অথচ এসব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক নিউজ পর্যন্ত করেনা। আল্লাহ জানেন, সাংবাদিকদের সাথে তাদের কোন যোগসুত্র রয়েছে কিনা। একটি জেলার প্রেসক্লাবের সামনে এমন অনৈতিক কাজ চললেও তারা কেন চুপ থাকে তা পাবনাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগেও এই হোটেলটির আরেকটি শাখা শহরের মুনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ইভিনিং টাচ আবাসিক হোটেল-২-এ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করেছিল ডিবি পুলিশ। অভিযানের সময় বন্ধ হলেও মালিকপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কয়েকদিন পরেই আবারও এসব হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়।