মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
বেনাপোলের ঐতিহ্যবাহী ৫৭০ বছরের মন্দির সোনার ইটের সন্ধানে ভেঙে ফেলার অভিযোগ করেছেন
মোঃ মাসুদ রানা যশোর
যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌরসভাধীন হিন্দু সনাতন ধর্মীয়দের, ঐতিহ্যবাহী পাঠবাড়ি নির্মানাধীন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ১৯ শে মার্চ) উদ্বোধন করেন প্রতি-উপমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। উক্ত স্থাপনাটি তিনি উদ্ধোধন করলেও, এদিকে ৮৫৭ সনের ৫৭০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী নিতাই গৌর সেবাকুঞ্জ মন্দিরটি না ভেঙ্গে। পুনঃসংস্কারের দাবী জানিয়েছেন অনেক প্রবীন স্থানীয় বিবেকবান হিন্দু সম্প্রদায় এর মানুষ। তাদের দাবী পুরাতন স্থাপনা ভাঙ্গলে হারিয়ে যাবে ৫৭০ বছরের পুরাতন নিদর্শন তেমনি হারিয়ে যাবে ভক্তের ভক্তি। এজন্য ১৯ ই মার্চ মন্দির ভিত্তি প্রস্থর অনুষ্ঠান চলাকালিন সময় পোষ্টার সম্বলিত দাবি জানান অতিথিদের সামনে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেনাপোল পাটবাড়ির শ্রী শ্রী নিতাই গৌর সেবাকুন্জের মধ্যে যে সকল মূর্তি ছিলো সে গুলো ইতিমধ্যেই সরানো হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বর্তমান মন্দিরটি রক্ষার জন্য স্থানীয় হিন্দুরা মন্দির রক্ষা কমিটি করেছেন। তার আহ্বায়ক শ্রী শান্তিপদ বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, ৮০ থেকে ১০০ জন স্বাক্ষরিত একটি আবেদন বিভন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়েছে যাতে ৫৭০ বছরের এই প্রচীন নিদর্শনটি রক্ষা করা যায়। মন্দির রক্ষা কমিটির সদস্য অসক দেবনাথ বলেন, এই পুরাতন ঐতিহ্যটি ভাঙার পিছনের আসল রহস্য হচ্ছে এই মন্দিরটি ভাঙ্গলে সোনার ইট বের হবে, এই লোভে তারা স্থাপনাটি ভাঙ্গতে চাচ্ছে। ২০ শে মার্চ (শনিবার) বেনাপোল পাঠবাড়ি আশ্রমে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৮৫৭ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী নিতাই গৌর সেবাকুঞ্জ যা প্রচীন আমল থেকে মন্দিরটিতে পূজা আর্চনা করে আসছেন দেশ বিদেশের সনাতন ধর্মালম্বী লোকজনরা। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রচীনকালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা মন্দিরটি ভাঙ্গার পরিকল্পনা করেছে বর্তমান মন্দির কমিটি। আর এতে বাঁধা প্রদান করেন স্থানীয় বিবেকবান হিন্দু মানুষেরা। তাদের দাবী পুরাতন স্থাপনা ভাঙ্গলে হারিয়ে যাবে ৫০০ বছরের পুরাতন নিদর্শন তেমনি হারিয়ে যাবে ভক্তের ভক্তি। জানা যায়, বেনাপোল পৌরসভার পাঠবাড়ি গ্রামে ৩ একর জায়গায় অবস্থিত হরিদাস ঠাকুরের তীর্থস্থান তৎকালীন প্রচীন জমিদার রামচন্দ্রের আমলে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মন্দিরটি। মন্দিরের স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে জানান, মন্দিরের সাথে স্থানীয় মানুষের অনেক স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে, প্রচীন নিদর্শন সম্বলিত এই মন্দিরে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। এটা ভাঙ্গার পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য আছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবীন এক ব্যাক্তি জানান ৫৭০ বছরের পুরানো মন্দির ভাঙ্গার কোন প্রশ্নই আসে না, নতুন মন্দির হোক তাতে কোন দাবী নেই কিন্তু ৫৭০ বছরের বিজড়িত স্থাপনার কোন ক্ষতি হতে দেব না। তাছাড়া তিনি মনে করেন এই মন্দির ভাঙ্গলে অনেক ক্ষতি হবে এই আশ্রমের। স্থানীয় বাসিন্দা সজল দত্ত জানান, ইতিমধ্যে মন্দিরের কিছু অংশ ভাঙ্গা হলে সেখান বের হয়েছে প্রাচীন কারুকার্য সম্বলিত টেরা কোটা ইট, যেগুলো বর্তমান সমাজের জন্য সংরক্ষণ করা জরুরী। বেনাপোল পাঠবাড়ি মন্দির কমিটির সাধারন সম্পাদক ফনিভূষন পালের কাছে মন্দির ভাঙ্গার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুরাতন মন্দির ভেঙ্গে নতুন মন্দিরের জন্য ৫ কোটি টাকার বাজেট হয়েছে তাই মন্দির ভেঙ্গে নতুন করা হবে। এদিকে প্রত্ন আইন ২০১৫ এর মতে ১০০ বছরের কোন পুরাতন নিদর্শনা ভাঙ্গতে হলে অনুমোদন নিতে হবে প্রত্ন মন্ত্রানালয়ের। কিন্তু সেখানে কোন অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে স্মৃতি বিজড়িত এই ৫৭০ বছরের এই স্থাপনাটি ভাঙ্গা ভাঙ্গা হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে মন্দির রক্ষা কমিটির সদস্যরা জানান, মন্দির রক্ষার্থে আদালতে রিট করা হবে সমস্ত কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে