বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৪ অপরাহ্ন

News Headline :
মিছিলে গিয়ে নিখোঁজ শাহীন এক মাসেও বাড়ি ফেরেনি, মর্গে থাকা লাশের দাবি পরিবারের পাবনায় নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের এক মাস পূর্ণ হওয়ায় শহীদদের স্মরণে পাবনায় শহীদি মার্চ কর্মসূচি পালন টাংগাইলের মধুপুরে “শহীদি মার্চ পালন” কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লুট হওয়া একটি গ্যাসগান উদ্ধার নওগাঁর মান্দায় লীজকৃত পুকুরের দখল পাচ্ছেন না যুবদলনেতা আব্দুল জলিল জুড়ীতে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন সাংবাদিকদের সাথে খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসনের মতবিনিময় সভা ইবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন রাজশাহীতে শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৪১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

রংপুরে বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অর্ধেক, মানা হচ্ছে না লোডশেডিংয়ের সময়সূচি, চরম দুর্ভোগ

Reading Time: 3 minutes

হারুন অর রশিদ সোহেল,রংপুর ব্যুরো:

রংপুর নগরীসহ বিভাগের আট জেলায় ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে তিনবার লোডশেডিং হওয়ার কথা। তবে দিনে ও রাতে বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দফায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকছে না। এর ফলে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সময়সূচি করা হলেও সেটি বাস্তবে মানা সম্ভব হচ্ছে না। এতে রংপুর নগরীসহ বিভিন্ন জেলা শহরগুলোর তুলনায় গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। প্রচ- গরমে দুর্ভোগে পড়েছে এই বিভাগের মানুষজন। তারা বিদ্যুৎতের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার দাবি জানিয়ে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ প্রায় অর্ধেক থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে রংপুর নগরীর মেডিকেল মোড়, ধাপ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বিদ্যুৎ নেই। যদিও তালিকা অনুযায়ী ওই এলাকায় বেলা দুইটা থেকে তিনটা ও বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা লোডশেডিং হওয়ার কথা। কিন্তুু তা মানা হচ্ছে। একই চিত্র নগরীর ব্যস্ততম এলাকা জাহাজ কোম্পানী মোড়, পায়রা চত্বর, নবাবগঞ্জ বাজার, সিটি বাজার, কাচারী বাজার আদালতপাড়া, বেতপট্রি ও মর্ডাণ- পার্কের মোড় এলাকায়। নগরীর ধাপ এলাকার বেশ কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক-কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, নেসকোর কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। বিদ্যুতের রুটিন অনুযায়ী সকালে বিদ্যুৎ থাকার কথা, কিন্তু তা নেই। কোনো নিয়মই মানা হচ্ছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। তাই জেনারেটর দিয়ে ক্লিনিক, ল্যাব ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চালু রাখতে হচ্ছে। এতে তাদের কাজের বাঘ্যাত ঘটছে। নগরীর চেকপোস্ট এলাকার শহিদুল ইসলাম, ইনামুল হক ও গৃহবধু রুম্পা আক্তার জানান, দিনে ও রাতে অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বাড়ির ফ্রিজে রাখা মাংস গলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। নগরীর শাহ সালেক মার্কেটের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন ও শাহ নেওয়াজ লাবুসহ বেশক কয়েকজন বলেন, এমনিতেই রাত আটটার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে দিনের অর্ধেকেরই বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে ব্যবসা হচ্ছে না। ক্রেতাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এদিকে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎসহ রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ৯৫০ থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট। আর দিনের চাহিদা ৭৬০ থেকে ৭৮০ মেগাওয়াট। সেখানে গতকাল বুধবার দিনে বিদ্যুতের সরবরাহ ৫০০ মেগাওয়াট। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৯০০ মেগাওয়াট। সেখানে সরবরাহ ছিল ৪৫০।
নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন বলেন, রংপুর নগরীসহ বিভাগের আট জেলায় চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে হাসপাতালসহ জরুরি আরও কিছু জায়গায় সব সময় বিদ্যুৎ-সরবরাহ রাখতে হচ্ছে। ফলে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি করা হলেও কিছু কিছু সময় সেটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, বলেন, ‘আমরা তো বিদ্যুৎ ধরে রাখতে পারছি না, যা পাচ্ছি, তা-ই কোটা করে নগরীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। সময় ও এলাকা নির্ধারণ করা হলেও এমন অবস্থার মধ্যে আগে কখনো পড়তে হয়নি। তাই সবকিছু মেইনটেন করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে সমস্যা উত্তণে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যা অব্যাহত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর জেলায় রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০-১৫৫ মেগাওয়াট। সেখানে মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ-সরবরাহ ছিল ৭৫ মেগাওয়াট। রংপুরেও মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একাধিকবার ও বুধবার ভোরে অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ-সরবরাহ ছিল না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পঞ্চগড় জেলায় মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৭৪ মেগাওয়াট। বরাদ্দ ছিল ৪২ মেগাওয়াট। বুধবার দিনে জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৫৩ মেগাওয়াট। মিলেছে ২৯ মেগাওয়াট। একই সঙ্গে গাইবান্ধা জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ২৪ মেগাওয়াটের বিপরীতে মিলেছে ১৩ মেগাওয়াট।
পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং স্থায়ী হওয়ার কথা। কিন্তুু দিনে ও রাতে বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দফায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকছে না। তবে দিনে কতবার লোডশেডিং হবে, এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
নীলফামারী শহরের ইটাখোলা এলাকার আবু মুসা, দিলারা বেগম ও কামাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, মঙ্গলবার রাতে ১১টার পর দুইবার লোডশেডিং হয়েছে। এরপর ভোরেও বিদ্যুৎ ছিল না। কখনো এক ঘণ্টা আবার কখনো দেড়-দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। গাইবান্ধা শহরের খন্দকার মিলন ও রিফাত সরকার জানান, বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনবার লোডশেডিং হয়েছে। প্রতিবারই এক ঘণ্টার ওপর লোডশেডিং স্থায়ী হচ্ছে। আইপিএস ঠিকমতো চার্জ নিতে পারছে না। এই গরমে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।
রংপুর, পঞ্চগড় ও গাইবান্ধা জেলার বেশ কয়েক অভিযোগ করে বলেন, রাতে তো সরকারি অফিস-আদালত সব বন্ধ থাকে। কিন্তু তখনো লোডশেডিং হচ্ছে কেন?

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com