সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী,রাজশাহী:
রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন হাদির মোড় খাদেমুল ইসলাম জামে মসজিদের দক্ষিণে পদ্মা নদীর পাড় এলাকায় চলছে জুয়ার রমরমা আসর।
পাশাপাশি চলছে মাদকের কারবার। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে একেক দিন একেক ঘরে জুয়ার আসর বসানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে জুয়া এই এলাকায় জুয়ার আসর পরিচালনা করছে জনৈক পলাশ ও নাদের আলির ছেলে মোমিন। স্থান পরিবর্তন করে কখনো খোলা মাঠে, কখনো ঘরের ভেতর, কখনো পলাশের বাড়িতে, কখনো পলাশের চাচাতো ভাই মমিনের বাড়িতে, আবার কখনো ক্লাব ঘরে আবার কখনো বা খোলা মাঠে এই জুয়ার আসর বসায় তারা। এই অপকর্মের জন্য তারা মোবাইল হাতে পাহারায় রাখে ১৫ থেকে ২০ জন যুবক ও কিশোর। তাদের কাজ হলো পুলিশ দেখলেই পলাশ ও মাদক কারবারী মোমিনকে ফোনে জানিয়ে দেয়া।
এসকল কিশোররা হাদির মোড় শহররক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে বসে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে বসে থাকে এবং তাদের মাধ্যমেই মাদকের সরবরাহ করে থাকে জনৈক মাদক কারবারী মোমিন।
আর তাদের জুয়ার আসরে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় গাঁজা, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ফেনসিডিল, হেরোইন ও মরন নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট।
জুয়ার আসরের পাশাপাশি মাদক সেবন ও বিভিন্ন স্থানে চাহিদামত মাদক পৌঁছে দিচ্ছে জুয়ার আসর সিন্ডিকেটের মূল হোতা মাদক কারবারী মোমিন ও তার সহযোগীরা।
স্থানীয়রা বলছে, মোঃ পলাশ আলী বলে আমি বোয়ালিয়া মডেল থানার এএসআই চঞ্চলের প্রাইভেটকার দেখাশোনা করি। আমার লোকজনকে পুলিশ কিছু বলবেনা বলেও প্রকাশ্যে বলে সে।
এএসআই চঞ্চলকে প্রায় প্রতিদিনই এ এলাকা আসতে দেখা যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা সাদের আলির চায়ের দোকানে বসে সময় কাটান। আবার অনেক সময় পদ্মা পাড়ের বসতিতে ঘুরে বেড়ান। এরই সুবাদে এএসআই চঞ্চলের নাম ভাংগিয়ে পলাশ জুয়ার ও মোমিন মাদকের সাম্্রাজ্য গড়ে তুলেছে এলাকায়। এতে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘিœত হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যপক হারে যুবক ও কিশোররা মাদকাশক্ত হয়ে পড়ছে।
আবার জুয়ার আসরে সর্বস্বান্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ঘটি বাটি ও নিজ স্ত্রী কন্যার সামান্য গহনাও বিক্রি করে খোয়াচ্ছে জুয়ার বোর্ডে। পারিবারিক অশান্তি ওই এলাকায় এখন নিত্যদিনের ঘটনা।
বাঁধের ওপর সাদের আলী দোকানের পাশে ও চায়ের দোকানের ভেতরে দিন রাত ২০ থেকে ৩০ জন কিশোর ও যুবকরা আড্ডা দেয়। সেই সাথে জুয়ার ও মাদকের পাহারাদার তারা। এদের প্রত্যেকের বয়স ১৩ থেকে ১৮ নিচে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে জুয়ার আসরের নিয়মিত কয়েকজন সদস্য জানান, পলাশ বুক ফুলিয়ে বলে আমি এএসআই চঞ্চলের লোক। কোন টেনশান নাই। এখানে পুলিশ প্রশাসন আসবেনা। এছাড়াও বোয়ালিয়া মডেল থানার এএসআই চঞ্চলের গাড়ির চালক বলে দাবি করে পলাশ।
এ ব্যপারে জানতে এএসআই চঞ্চলের মুঠো ফোনে ফোন দেয়া হয়। তিনি জানান, আমার কোন গাড়ি নাই। হাদির মোড়ে নদীর পাড়ে যাই ওয়ারেন্টের আসামী ধরতে। পলাশকে আমি চিনি। তার মাধ্যমে খোঁজ খবর নেই। তবে সে আমার নিয়মিত সোর্স না বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, জুয়া ,মাদকসহ কোন অপরাধের ছাড় নেই। হাদির মোড়ের পরিবেশের ব্যপারে আমার জানা ছিলো না। দ্রুত অভিযান পরিচালনা করবেন বলেও জানান ওসি।