বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
ডেক্স নিউজ :
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে তুলেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে রাস্তায় মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। আজ বুধবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট সরোয়ার জাহানের আদালতে আনা হয়।বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।বাবুল আক্তারের আইনজীবী মো.আরিফুর রহমান জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের প্রতিবেদন ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্ত করার জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কাছে হস্তান্তর করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ মে) সারাদিন বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। এরআগে সোমবার (১০ মে) মামলার বাদি হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় তাকে।বুধবার (১২ মে) দুপুর একটার দিকে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয় বলে জানান নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবউদ্দিন আহমেদ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। বাবুল মামলার বাদি।তিনি বলেন, মিতু হত্যার তিনদিন পর বাবুল আক্তার তার ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হককে লাভের অংশ থেকে তাকে তিন লাখ টাকা দিতে বলেছিলেন। সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা গাজী আল মামুনের কাছে পাঠান। মামুন ওই টাকা মুসা, ওয়াসিমসহ আসামিদের ভাগ করে দেয়। তবে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তা জানা যায়নি। গত মঙ্গলবার (১১ মে) বাবুলের ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ও মামুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দীনের আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। সেখানে দুজনই বাবুলের নির্দেশে মিতু হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মিতুকে।পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। তার ঠিক আগেই চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে ছিলেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়, যার বাদী ছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই।তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বুধবার দুপুরে সেই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন আদালতে। ৫৭৫ পৃষ্ঠার ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন এডিসি (প্রসিকিউশন) শাখায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। মঙ্গলবার মিতু হত্যা মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআইতে ডাকা হয়েছিল। এরপর তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। এর আগে সেটি নগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করেছিল। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলা তদন্তের ভার পিবিআইকে দেন।