শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ শহিদুল ইসলাম, খুলনা :
খুলনার ডুমুরিয়ায় মৎস্য ঘেরের আইলে আগাম সীম ও অফ-সিজনে তরমুজ চাষ দেখতে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা ও কুলবাড়িয়া মৎস্য ঘেরের আইলে আগাম সীম চাষ ও অফ-সিজনে তরমুজ চাষ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে ডুুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক আয়োজিত কাঁঠালতলার বরাতিয়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে কৃষক সমাবেশে ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এসময় কৃষি সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনা অনেক। ইতোমধ্যে আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা ধান, ডাল, তরমুজ, আলু, ভুট্টা, বার্লি, সূর্যমুখী, শাকসবজিসহ অনেক ফসলের লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। এসব জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উপকূলবর্তী বিপুল এলাকার চাষীদের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। চাষিরা এসব ফসলের চাষ করলে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় নতুন করে কৃষিবিপ্লব ঘটবে। এ এলাকার মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার মানের কাঙ্খিত পরিবর্তন হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন,দেশের প্রায় ২৫% এলাকা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। লবণাক্ততার কারণে এ এলাকায় সারা বছরে একটি ফসল হতো। আমন ধান তোলার পর বছরের বাকি সময়টা মাঠের পর মাঠ জমি অলস পড়ে থাকত। এই প্রতিকূল ও বিরূপ পরিবেশে বছরে কীভাবে দুইবার বা তিনবার ফসল চাষ করা যায়- সেলক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে আসছি। ইতোমধ্যে অনেক সাফল্য এসেছে। এটিকে আরো সম্প্রসারিত করা হবে, যাতে এ এলাকায় সারা বছর ধরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায়।
সেচের পানির সমস্যা দূর করতে খুলনা, বাগেরহাটে ৬০০’র বেশি খাল খনন/পুন:খনন করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রী নায়ায়ণ চন্দ্র চন্দ, খুলনা জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ এ বিএম সফিকুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো: বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক মো: হাফিজুর রহমান, ডুুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন পারভিনা রুমা, উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক জিএম ফারুক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে, উপকূলীয় এলাকায় মোট জমির পরিমাণ ২৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর, এর মধ্যে চাষযোগ্য ২১ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর। আর লবণাক্ত এলাকার পরিমাণ ১০ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর। এছাড়া লবণ পানির ভয়াবহতার কারণে প্রতিবছর শুষ্ক মওসুমে উপকূলীয় এলাকায় ৫ লক্ষাধিক হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যায়।
মৃত্তিকা গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, খুলনার মোট ২ লাখ ১৩ হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য জমির মধ্যে লবণাক্ত জমির পরিমাণ এক লাখ নব্বই হাজার হেক্টর। যা মোট আবাদযোগ্য জমির ৮৯ শতাংশ।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী কৃষিতে সফল হওয়া কৃষকদের মাঝে সনদপত্র ও পুরস্কারপ্রদান করেন।