সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঈশ্বরদী পাবনা :
স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা পালন করা এক ব্যক্তির ছেলেকে ঈশ্বরদী উপজেলা নব-গঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য করার পর তা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নেতা-কর্মীদের দাবির মুখে অবশেষে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে রাজাকারপুত্র খাইরুলকে বহিস্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিলে পাবনা জেলা কমিটি অবশেষে বিতর্কিত ঈশ্বরদী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মুশুড়িয়াপাড়ার ভাটাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ খায়রুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
বিতর্কিত খাইরুল নব-গঠিত উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির ৮ নং সদস্য ছিলেন । আজ রোববার (০৮ আগষ্ট) জেলা কমিটির সভাপতি আহমেদ শরিফ ডাবলু ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রুহুল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক রুহুল আমীন জানান, কমিটি অনুমোদনের সময় খাইরুল রাজাকারের ছেলে আমরা বিষয়টি জানতাম না। পরবর্তিতে আমাদের কাছে অভিযোগ এলে আমরা অভিযুক্তকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করি।
ঈশ্বরদী উপজেলার আহবায়ক মাসুদ রানা বলেন, টাকা নিয়ে কাউকে কমিটিতে স্থান দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। কারন আমি নিজেই নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছি। আমি ছাত্রলীগ করেছি। এখন স্বেচ্ছাসেবকলীগ আহবায়ক এর দায়িত্ব পেয়েছি।কলেজ ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে আমার ২০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কোন কলংক নেই। আমাদের কমিটি জেলা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।কাকে দিয়েছে, কেন দিয়েছে সেটা জেলা কমিটির বিষয়।অভিযুক্ত খাইরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে আমার জেলা কমিটিকে অবহিত করি। জেলা কমিটি খাইরুলকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য গত ৩১ জুলাই মোঃ মাসুদ রানাকে আহবায়ক, মোঃ সাকত্তিয়াত হোসেন সজীব মালিথাকে যুগ্ন আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলু ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন। এতে খায়রুল ইসলামকে ৮ নম্বর সদস্য করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় নেতা অভিযোগ করেন, ‘ঈশ্বরদী উপজেলার হাজার হাজার ত্যাগী নেতা-কর্মী সক্রিয় থাকার পরও কীভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালি নিধন ও কুখ্যাত রাজাকার আবুল হোসেনের পুত্র খায়রুলকে অন্তভূক্ত করা হয়? মুক্তিযুদ্ধের সময় আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ঈশ্বরদীতে হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘর লুটপাট হয়েছে। টাকার বিনিময়ে যারা খায়রুলকে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য করেছে তাঁদের শাস্তি দাবি করছি। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। এ বিষয়ে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, আবুল হোসেন স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। এটি সর্বজন স্বীকৃত।
ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন আবুল হোসেন কুক্ষাত রাজাকার। স্বাধীনতার সময় সে পাকবাহীনীর সহায়তায় হত্যা-ধর্ষনের মত অনেক অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। আবুল হোসেনের ছেলে খায়রুলকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটিতে অন্তভুক্ত করায় আমি পাবনা জেলার নেতাদের খায়রুলকে বাদ দিতে বলে দিয়েছি।