শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর :
মানুষের জীবনে শখের শেষ নেই। কথায় আছে ‘শখের তোলা ৮০ টাকা’। সাধ্যের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ তার শখ পূরণ করে থাকেন। কেউ বিলাসবহুল বাড়ি অথবা নির্জন পাহাড়ি এলাকায় বাংলো বাড়ি বানিয়ে শখ মিটায় । তবে এক্ষেত্রে বৃত্তের যোগ থাকতে হয়। শেরপুর এমনই একজন বিত্তহীন মানুষ রয়েছেন যিনি তার সাধ্যের মধ্যে থেকে তার শখ পূরণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার নাম আহসান আলী। তিনি ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু তথা নৌকার একজন ভক্ত। পেশায় ক্ষুদ্র কৃষক। পাশাপাশি তিনি রাজমিস্ত্রির কাজও করে থাকেন । অনেকদিন থেকেই তিনি একটি নৌকাবাড়ি বানাবেন বলে মনে মনে স্বপ্ন এঁকেছিলেন। তিনি তার সে স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেছেন। নিজের টাকা এবং শ্রমের বিনিময়ে ৮ শতক জমির উপর তৈরি করছেন নৌকাবাড়ি।
জানা গেছে, শেরপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের শেষ সীমানা কসবা কাঠগড় গ্রাম। এখানে বাস করেন আহসান আলী । ৫ শতক জমির মধ্যে মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। তার বাড়ির পাশ দিয়ে মৃগী নদী বয়ে গেছে । নদীর ওপারে বেশ কিছু জমি রয়েছে তার। সেখানে বছর জুড়ে ধান পাটসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করে থাকেন। নদী পার হতে নৌকা অথবা বাঁশের সাঁকোই ভরসা। এবার তিনি তার ৮ শতক জমির উপর নৌকাবাড়ি তৈরি কাজ শুরু করেছেন। তিনি নিজেই রাজমিস্ত্রি হিসেবে এ বাড়ি তৈরি করবেন । নৌকাবাড়ির নকশাও তিনি নিজেই করেছেন। এ বাড়িতে তিনটি কক্ষ থাকবে। একটিতে তিনি ও তার স্ত্রী, অন্যটিতে ছেলেমেয়েরা আর অপরটিতে থাকবে রান্নাঘর এমনটাই পরিকল্পনা তার। বাড়ি তৈরিতে নদীর ওপার থেকে নিজেই ইট, বালু, পানি এবং সিমেন্ট নিয়ে এসে তার নৌকা বাড়ি তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে তার নৌকা বাড়িটি যেখানে তৈরি করা হচ্ছে সেটি শেরপুর সদর উপজেলা লছমনপুর ইউনিয়নের লসমানপুর গ্রামের মধ্যে পড়েছে। সেখানে প্রায় ২ থেকে ৩ শ একর জমির চাষাবাদ করে থাকেন ওই কসবা গ্রামের মানুষ। আহসান আলীর বাড়ি তৈরি কাজ শুরু করা দেখে আশপাশের কৃষকরা বেশ কৌতূহল নিয়ে তার বাড়ি তৈরির কাজ দেখতে আসছেন। এছাড়া আশপাশের অনেক মানুষ এ গ্রামে বেড়াতে এসে যখন জানতে পারছেন এখানে একটি নৌকাবাড়ি হচ্ছে তখন ওই নৌকাবাড়ি তৈরি দেখতেও আসছেন অনেকেই।
আহসান আলী যেহেতু নিজের টাকায় একাই বাড়িটি নির্মাণ করবেন তাই তিনি আগামী ১ বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে কাজটি সম্পন্ন করতে চাচ্ছেন। কারণ তার আর্থিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না। তিনি তার আয়ের জমানো টাকা দিয়ে বাড়ির কাজটি করবেন । তবে কোনো সরকারি বা নৌকা ভক্ত কারো সহযোগিতা পেলে বাড়ির কাজ দ্রæত শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।