admin
- ১৩ জানুয়ারী, ২০২৩ / ৯৯ Time View
Reading Time: 2 minutes
মো: ইকবাল হোসেন, কয়রা থুলনা:
খুলনার কয়রা উপজেলা নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে। সেবাগ্রহীতারা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উৎকোচ গ্রহণ সহ অফিস রুম লক করে সেবার নামে কালক্ষেপণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচন অফিসার নিয়মিত অফিস করেন না। সুবিধাভোগীদের সেবা না দিয়ে অফিস রুমের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। দিনের পর দিন নির্বাচন অফিসে গিয়েও সেবা পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। করা হয় না মাসিক ও নিয়মিত সভা। এতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। বঞ্চিত হচ্ছে সেবা গ্রহীতারা। ওপর মহলকে বশ করে সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে বছরের পর বছর ওই নির্বাচন কর্মকর্তা কয়রায় চাকরি করছেন। তার একক নিয়ন্ত্রণে চলে এ অফিস। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার ছত্রছায়ায় সাধারন সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করছে। হয়রানি সহ ঘুষ বাণিজ্যের কাজও তিনি করেন। অভিযোগ উঠেছে- নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি, সংশোধন ও উত্তোলনে সেবা প্রার্থীরা বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। এতে করে প্রবাসী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এখন চরম পর্যায়ে। তবে দীর্ঘদিন নির্বাচন কর্মকর্তার অনিয়মিত অফিস করা, নানা অজুহাতে সেবা প্রার্থীর নিকট টাকা দাবি। আবার নির্দিষ্ট টাকা না দিলে এনআইডি কার্ড প্রণয়ন, সংশোধন ও প্রদান সহ নানা জটিলতার সৃষ্টি করছে তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় অর্ধ শতাধিক লোকজনের ভিড়। কেউ নতুন ভোটার হতে, কেউ সংশোধনের জন্য আবার কেউবা এনআইডি’র ভুল সংশোধনের জন্য অফিসের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অফিসার হযরত আলী অফিস রুমের ভিতর থেকে দরজা লক করে ভিতরে মোবাইল ও সহকর্মীদের সাথে খোশগল্পে ব্যস্ত। সেবা প্রার্থীরা নির্বাচন কর্মকর্তা সাথে দেখা করতে চাইলে বিকাল ৪ টার পরে আসতে বলেন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হস্তক্ষেপে কিছু সময়ের জন্য তিনি রুমের দরজা খুলেন। পরে বৃহস্পতিবার অফিসে গিয়েও নির্বাচন কর্মকর্তাকে অফিসে পাওয়া যায় নি। ভুক্তভোগী ফয়সাল হোসেন বলেন, আমার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধের আবেদন করেছি ৬ মাস আগে। নির্বাচন অফিসে গেলেই বলে অফিসার নেই, পরে আসুন। গতকাল অফিসে গেলে কর্মচারী জানায়, আমার আবেদন গ্রহন হয়নি। পরে তিনি মোটা অংকের টাকা দাবি করে। নির্বাচন অফিসারের সাথে দেখা করতে চাইলে বন্ধ রুমের ভিতর থেকে বিকাল ৪ টার পরে আসতে বলেন। নতুন মহিলা ভোটার প্রার্থী শাকিলা পারভিন ভোটারের জন্য আসেন নির্বাচন অফিসে। শাকিলাকেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিমান ঘুষের টাকা দিলে কোন ঝামেলা নেই। ভোটার ফরম গ্রহণ, জমা, ফিঙ্গার দেওয়া সহ সব জায়গায় ভোগান্তিতে পড়েছি। অফিসারকে তো পাই না। কর্মচারীরা এখন-তখন করে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছে। নতুন ভোটার হতে গিয়ে বিপদে পড়ে গেছি।’ সূত্র মতে, কয়রা উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন এনআইডি বাবদ ১১০০, সংশোধনের জন্য ১৪০, স্থানান্তরের ১৮০ এবং হারানো এনআইডি পেতে ৫০ টি আবেদন জমা পড়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী, প্রবাসী ও চাকরিজীবীর আবেদন রয়েছে। অথচ তাদের এনআইডি পাওয়ার ব্যবস্থা না করে উল্টো গত ৪ মাস উপজেলার মাসিক ও বিশেষ কমিটির মিটিংয়ে পাওয়া যায়নি উপজেলা নির্বাচন অফিসার হযরত আলীকে। এতে এসব আবেদন ঝুলে রয়েছে মাসের পর মাস। এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার হযরত আলী ঘুষ বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে জানান, অফিস সঠিক নিয়মে চলছে। আমি অফিস ফাঁকি দেই না। মাঝে আমার একদিন শরীর খারাপ ছিল, তাই দরজা বন্ধ করে ভিতরে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। সপ্তাহে ২দিন তদন্তে আমি বাইরে যায়। এতে সেবা গ্রহীতারা আমাকে অফিসে পায় না। তবে সপ্তাহে দুইদিন কোথায় সেবা দিতে যান, তার সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি।