admin
- ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ / ৯০ Time View
Reading Time: 2 minutes
হযরত বেল্লাল, সুুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা :
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এতিহ্য ঘানি শিল্প। ঘানির ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে ভোর রাতে ঘুম ভাঙ্গে যেত স্থানীয়দের। ঘর-ঘর ঘানি শিল্পের কারণে গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে তেলি পাড়া। এখন ভোর হলে আর ঘ্যানির ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ শুনা যায় না। গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে গরু দিয়ে ঘ্যানি টানে সরিষার থেকে তেল বের করে বিক্রি-করাই ছিলো এই গ্রামের মানুষের একমাত্র পেশা। তাদের সংসার চলত ঘ্যানির তেল বিক্রি করে। যান্ত্রিক এই যুগে ঘ্যানি শিল্প অচল হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। বাধ্য হয়ে অনেকে ছাড়ছে বাপ দাদার পেশা। অনেকে আবার মুলধনের অভাবে হাতে ঘোনা কয়েকজন অন্য পেশায় যেতে না পেরে আকড়ে ধরে আছে এ পেশা। ওই গ্রামে ৫ হতে ৬টি পরিবার এখনও ঘানি টানছে গরু দিয়ে। ঘানি ভাঙা তেলের চাহিদা ব্যাপক। খাঁটি সরিষার তেল বলতে ঘানি ভাঙ্গা তেলের বিকল্প নেই। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মীরগঞ্জ হাটে ৫টি দোকানে ঘ্যানি টানা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে আজও। তেলি আব্দুল হাই, আজিজার রহমান আজি, নইমুদ্দি মিয়া, ভোলা মিয়া ও নজু মিয়া চিরাচরিত নিয়মে কলসে করে তেল নিয়ে এসে বিক্রি করছেন হাটে।
ঘ্যানির মালিক আব্দুল হাই বলেন, অন্যান্য তেলের থেকে ঘ্যানি ভাঙা তেলের দাম বেশি এবং চাহিদাও বেশি। বাজারে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এখনও ছুটে আসেন ঘ্যানির তেল কিনতে। ঘ্যানির তেলের ঝাঁঝ ও গন্ধ আলাদা। আমরা সব সময় খুচরা তেল বিক্রি করে থাকি। নবজাতক সন্তানের গায়ে লাগানোর জন্য ঘ্যানি টানা তেলের কদর এখনও রয়েছে। এছাড়া, ঝাল মুড়ি, ভর্তা, ভাঁজিতে ব্যবহার করা হয় ঘ্যানির তেল। প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা দরে মীরগঞ্জ বাজারের ব্যসায়ী বিপুল সাহা বলেন, ঘ্যানি টানা সরিষার তেলের চাহিদা থাকলেও এখন তেলিরা ঘানির তেল বিক্রি ছেড়ে দেওয়ায় বিভিন্ন কম্পানি বোতল জাত তেল বিক্রয় করতে হচ্ছে। ঘ্যানি তেলের চাহিদা শীতের সময়ই বেশি থাকে। উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির জানান, তেলের তেলেজমাতির কারণে কৃষকরা এখন সরিষা চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এমনকি অনেক কৃষক নিতের ক্ষেতে উৎপাদিত সরিষা মেশিনের নিয়ে তেল উৎপাদন করে ব্যবহার করছে। যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ঘানি শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।