শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
পাভেল মিয়া,কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামে চলতি বছরে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলনে কৃষকরা খুশি হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে পাট বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর পাটের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু দাম কম হওয়ায় খুশি নন কৃষকরা।মৌসুমের শুরুতে দাম ভালো পেলেও বর্তমান বাজারের পাটের দাম অনেক কম। লাভ তো দূরের কথা পাট আবাদের খরচ উঠবে কিনা এ নিয়েও দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা। বর্তমানে মণ প্রতি পাট ১৬০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে পাটের দাম আরো ভালো ছিল। পাটের এমন দামে আগামী মৌসুমে পাট চাষের আশা ছেড়ে দেবেন বলে জানান অনেক চাষি।সরে জমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে যাত্রাপুর হাট। সপ্তাহে দুই দিন বসে এ হাট। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে নৌকা, সাইকেল ও ঘোড়ার গাড়ি করে প্রতিদিন আসেন পাট চাষিরা পাট বিক্রি করতে। অনেক কৃষক দাম ভালো পাওয়ার আশায় এলেও বাজারে এসে দাম কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। অন্যান্য দিনের চেয়ে পাটের মণ প্রতি দাম কমেছে ৩০০-৪০০ টাকা। আবাদ খরচ যোগান দিতে হিমশিম খেয়ে দাম কম হলে তাদের লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা নেই বলে জানান অনেকেই।পাঁচগাছী ইউনিয়নেরনর কদমতলা গ্রামের কৃষক ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে অনেক খরচ হয়েছে। সার,পানি, কীটনাশক, আঁশ ছড়ানো মজুরি খরচসহ এক বিঘাতেই ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে এক বিঘায় আবাদ হয়েছে মাত্র ৮-১০ মণ পাট।খরচ অনুপাতে পাটের আবাদে এরকম দামে কোন লাভ নেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে দাম না থাকলে আর পাট চাষই করব না।বাজারে আসা অপর এক কৃষক জলিল মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন আগে যখন নতুন পাট নামে দাম ভালো ছিল। এখন দাম নেই। বিগত এক বছর দরে কোন দাম পাচ্ছি না। পাটের আবাদে খরচ যেমন তেমন লাভ না হলে আবাদ করি কি করে।চর ভগবতীপুরের পাট ব্যবসায়ী আসলাম মিয়া বলেন, আমি কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পাট কিনি ও বেচি। মণ প্রতি ১৫০০ থেকে ১৬০০ কিনছি। যাত্রাপুর হাটে এসে আসল দামই ওঠে না। পরিবহন খরচ, কুলি খরচ, হাটের খাজনা হিসেব করলে লাভই থাকে না। যাত্রাপুর হাটের অপর এক ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম বলেন, গত হাটে পাটের দাম মণ প্রতি ২২শ থেকে ২৩শ টাকা ছিল কিন্তু এখন তা সর্বোচ্চ ১৮০০-১৯০০টাকা। দাম না বাড়লে আমার লোকসানের মুখ দেখতে হবে। কুড়িগ্রাম জেলা মুখ্য পাট পরিদর্শক এটিএম খায়রুল হক বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে পাটের দাম ভালো ছিল। এখন পাটের দাম কমেছে। কারণ, অধিকাংশ ব্যবসায়ী কারখানায় পাট দিয়ে তাদের পূর্বের টাকা না পাওয়ায় হাত শূন্য। তাই নতুন করে পাট কেনার চাহিদা তাদের কমে গেছে।