শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলায় এক অসহায় বিধবা মহিলাকে মারধর করে নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করে দখল নেয়ার চেষ্টা এবং নগদ টাকা ও স্বর্নলংকার লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শরিফুল ইসলাম এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পৌর এলাকার ১১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরাগ্রাম মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোববার চার জনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় একটি লিখিত এজাহার দেওয়া হলেও অগাত কারনে ৩ দিনেও মামলা রেকর্ড করতে গড়িমসি করছে থানা পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন, সদর উপজেলার একই এলাকার ব্যবসায়ী মৃত সোনারদী মন্ডলের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪৫) তার ভাই রাকিব (৪০), হাওয়া বেগম (৫০), হেনা বেগম (৪০)।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোসাঃ নাসিমা (৪০) বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর পৈতৃক সুত্রে পাওয়া ভিটামাটিতে ৩০/৩৫ বছর যাবৎ বাস করছি। ১৭ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেলে আমার ছেলে নাইম ও মেয়ে নাইমাকে নিয়ে অতি কষ্টে সংসার চালায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে শরিফুল আমাকে এখান থেকে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে। প্রথমে আমার বাড়ি কিনে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রলোভন দেয়, রাজি না হলে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাপ প্রয়োগ করে। এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর রটনা রটায়।
সেই জেরে শনিবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শরিফুল ইসলাম তার নেতৃত্বে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র (দা, লোহার রড, কাতা, সাবল, হাতুড়ী, হাম্বল) হাতে আমাদের বাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। বলেই কাঁদতে কাঁদতে ভাংচুরের একটি ভিডিও ফুটেজ বের করে দেখান ভুক্তভোগী নাসিমা। আমি সামনে এগিয়ে গেলে আমাকে হত্যার জন্য আমার মাথায় হাতুড়ির আঘাত করতে চাইলে আমি মাটিতে পড়ে যায়, হাতুড়ির আঘাত না লাগায় পরে বুকে সজোরে লাথি মেরে ইটের ওপর ফেলে দেয়, এতে আমি রক্তাক্ত হয়ে যায়।
স্থানীয়রা, আমাকে উদ্ধার করে ২৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাইনা জমি বিক্রয়ের ১ লাখ পয়তাল্লিশ হাজার টাকা ও আড়াই লাখ টাকার ৩ ভরি সোনার গয়না লুট করে নিয়ে যায়। আমি অসহায় একজন বিধবা মহিলা বাধ্য হয়ে বাদী হয়ে অগাত সহ চার জনকে অভিযুক্ত করে সদর মডেল থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছি। কিন্তুু ৩ দিন পার হলেও এজাহার রেকর্ড না করে টালবাহানা করছে থানা পুলিশ। আমি শরিফুলসহ অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট করিনি। তারাই আমার বোনকে তাদের বাড়ির সামনে পেয়ে ওরা মা মেয়ে মারধোর করে। তারপর আমাকে ফাঁসাতে নিজেরাই বাড়ি ভাংচুর করে, থানায় গিয়ে আমার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করে। আমার জমির সঠিক কাগজপত্র আছে,আমি সব সময় আপোষ মিমাংসায় বসতে রাজি আছি। আমার দায়ের করা একটি মামলা তাদের বিরুদ্ধে চলমান আছে।
বাড়ি ভাংচুরের একটি ভিডিওতে আপনি নির্দেশ দিচ্ছেন এমন প্রমাণ আছে, প্রশ্ন করলে সদুত্তর না দিয়ে এই প্রতিবেদককে টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করে অভিযুক্ত শরিফুল। শুধু তাই না, সে কথিত সাংবাদিক দিয়ে টাকার বিনিময়ে ভুলভাল তথ্য সংবলিত নাম সর্বস্ব ভুঁইফোঁড় পোর্টালে নিউজ প্রকাশ করিয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এর জন্য তদন্ত সাপেক্ষে এদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে অসহায় পরিবারটি।
এতে করে অসহায় বিধবা পরিবারটির ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগ করে ভুক্তভোগী অসহায় বিধবা মহিলা নাসিমা। এখনো মামলা না করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে পরিবারটির উপর।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন মুঠোফোনে বলেন,এজাহারে লিখার কিছুটা ভুলভ্রান্তি আছে তাই রেকর্ড করতে বিলম্ব হয়েছে। বিধবা মহিলা নাসিমাকে ডাকা হয়েছে, সে এলেই মামলা রেকর্ড করা হবে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধী যেই হোক আমার কাছে কোন প্রকার ছাড় নেই, অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে, কারও তদবির চলবেনা।