মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ :
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সেনা সদস্যের মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা রুজুর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মূলহোতাসহ দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।
র্যাব-১৪ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের জানায়, হত্যা মামলার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে ১৯ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাত আনুমানিক ৯ টায় অধিনায়ক র্যাব – ১৪, ময়মনসিংহ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার উপ-পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে একটি চৌকস আভিযানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ও ২ আসামীকে আটক করতে সক্ষম হয়। আসামীরা হল হাসান (৩০), ও মামুনুর রশিদ (২৮), উভয় পিতা- আব্দুর রাজ্জাক, সাং-কলাকান্দা, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা – ময়মনসিংহ। মামলার বিবরণে জানা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানাধীন কলাকান্দা গ্রামের সেনা সদস্যের মা ভিকটিম মাহমুদা খাতুন (৪৫) এর পরিবারের লোকজন এবং বিবাদীরা সম্পত্তির অংশীদার হওয়ায় তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বসতবাড়ীর জমি নিয়ে দ্বন্দ চলছিল। এরই প্রেক্ষিতে উক্ত দ্বন্দ নিরসন কল্পে ১৬ ফেব্রুয়ারি ( ঘটনার দিন ) স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা ৩০ পর্যন্ত সালিস দরবার বসে। কিন্তু উক্ত সালিস দরবারে কোন সমাধান না হওয়ায় যার যার মতো সবাই বাড়ীতে চলে যায়। ঐদিন দুপুর অনুমান ১ টার সময় সেনা সদস্যের মা ভিকটিম তার বাড়ীর গোয়ালঘর পরিষ্কার করার সময় আসামীরা বাড়ীতে অতর্কিত আক্রমন করে। আসামী মাসুদ মিয়া, হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, মামুনুর রশিদ, মিরাজ আলী, লিজা আক্তার, লাইলী আক্তার, আনোয়ারা ওরফে আঙ্গুরী বেগমরা হাতে কুড়াল, বাঁশের লঠি ও কাঠের শারক নিয়ে গোয়ালঘরের সামনে আসিয়া ভিকটিমকে এলোপাথারী ভাবে মারপিঠ করতে থাকে। ভিকটিমের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের সামনে বিবাদী মাসুদ মিয়া কুড়াল দিয়ে সেনা সদস্যের মা ভিকটিমের মাথার মাঝখানে কোপ মারিলে মাথায় প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয় এবং মাথা থেকে মগজ বের হয়ে আসে। ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করতে অন্যান্য আসামীরাও এলোপাতাড়ি মারপিট করিয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে, ভিকটিমের স্বজনগন ভিকটিমকে মুমূর্ষ অবস্থায় মুক্তাগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যার ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. আফজাল হোসেন রনি (২৮), পিতা- আব্দুর রউফ, সাং-কলাকান্দা, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহ ০৮ (আট) জনকে আসামী করে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং-১৯, তারিখঃ ১৭/০২/২০২৪খ্রি., ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩০২/১১৪/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
উক্ত ঘটনার পর থেকে আসামিরা তাদের নিজ বাড়ি ত্যাগ করে গা ঢাকা দিয়ে ছদ্মবেশে পলাতক ছিল। ধৃত আসামিদেরকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।