রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাহবুব খান,নরসিংদী:
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ ‘চায়না দুয়ারি’ জাল দিয়ে চলছে অবাধে মাছ শিকার। খাল-বিলে ও জলাশয়ে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্যাপক হারে ছোট মাছ শিকার করছেন জেলেরা।এতে দেশি নানা প্রজাতির মাছের অবাধ বিচরণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে সচেতন মহল। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে জোরালো কোনো ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ তাদের।সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় খাল-বিলের জলে, নদ-নদীজুড়ে জেলেরা ব্যবহার করতে শুরু করেছে এই জাল। বিলের জলে ও নদ-নদীতে থাকা সব ধরনের দেশীয় প্রজাতির মাছ সুক্ষ্ম এই জালে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে পানি বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বড় বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই সর্বশেষ প্রযুক্তির চায়না জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী, খাল-বিল ও ছোট নদীগুলো।জানা গেছে, চায়না জাল সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ৬০ থেকে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ক্ষুদ্র ফাঁশ বিশিষ্ট ঢলুক আকৃতির হয়ে থাকে। লোহার ৪টি রড ও রডের রিং দিয়ে খোঁপ খোঁপ আকারে বাক্স তৈরি করে চারপাশ সুক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেড়াও করে তৈরি করা হয়। এই জালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বিলের জলের ও নদীর তলদেশে লম্বালম্বি ভাবে লেগে থাকে। ফলে কোন প্রকার খাদ্য দ্রব্য ছাড়াই দুদিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত মাছের আশায় ঘ্রাণ জাতীয় খাবার দিয়ে থাকে। একটি চায়না জালের দাম মান ভেদে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। উপজেলার শিবপুর বাজার,পুটিয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ধুমছে বিক্রি হচ্ছে এই “চায়না দুয়ারি” জাল।পেশাদার জেলেরা জানান, চায়না জালে সব ধরণের মাছ ছেঁকে উঠে, সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায়, অহরহ স্থানীয় মৌসুমী মৎস্য শিকারীরা মাছ ধরতে নেমেছে। ফলে আমরা যারা চিরাচরিত কৌশল দিয়ে মাছ ধরতাম তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না জাল কিনেছে, কেউ কেউ আবার কিনতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ছমায়া বন্দ, শিবপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নল্লার বিল,মাছিমপুর ইউনিয়নের গড়িয়া বিল,দুলালপুর ইউনিয়নের চিনাদী বিল,চক্রধা ইউনিয়নের দোপাথর,বিলশরণ ও নিনগাও এলাকার নিচু জলাভূমিসহ উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নের বিভিন্ন খাল-বিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই জাল। যেখানে হাঁটু পরিমাণ পানি সেখানেই এই জাল দেখা যায়, সারারাত পেতে রাখার পর সকালে তুলে আনা হয়। এসময় জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় সব মাছ, বিলে থাকা জলজ প্রানী এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও। এ বিষয়ে ওই এলাকার অনেকেই বলেন এ জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর হয়ত বিলে আর কোনো দেশীয় মাছ পাওয়া যাবে না।শিবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুমন লাল দেবনাথ বলেন, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। প্রাথমিকভাবে সব ধরনের নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে। এসিল্যান্ড স্যারের সাথে সমন্বয় করে এসব জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।