শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ মাহমুদ উদ্দিন, জুড়ী মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে ফসলি জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাইয়ের হাত ভাই খুনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ সগরনাল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত ব্যক্তির লাশ পুলিশ হেফাজতে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ সাগরনাল গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল লতিফের তিন ছেলের মধ্যে ফসলি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবদ বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকদিন বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয় নি। ঘটনার দিন সকালে মৃত হাজী আব্দুল লতিফের ছেলে বড়লেখা উপজেলার ছিদ্দিক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল ও ফারুক মিয়া বিরোধপূর্ণ জমিতে হাল চাষ করতে গেলে অপর ছেলে আব্দুল হামিদ কালা (৬০) বাঁধা দেয়। বাঁধা দেওয়ার এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও মারামারি হয়। ঘটনাস্থলে আব্দুল হামিদ কালা (৬০) আহত হওয়ার এক পর্যায়ে স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সহকারী পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) দীপঙ্কর ঘোষ ও জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নিহতের বড় ছেলে আপ্তাব মিয়া বলেন, “আজ সকালে জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বাবার উপর আমার চাচা বড়লেখা উপজেলার ছিদ্দিক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল, ফারুক আহমদ ও আমার বাবার চাচাতো ভাই আব্দুল খালেক হামলা চালায়। তাদের হামলায় সাথে সাথে সেখানেই আমার বাবা মারা যান। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা দীর্ঘ ২৫ বছর প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে আমার বাবার টাকা আত্মসাৎ করে আমার চাচা ছিদ্দিক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল জুড়ীর চৌমুহনী সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি রেখেছে। আমি আমার বাবার হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জুনেদ আহমদ বলেন, ফসলি জমি নিয়ে এ পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবদ বিরোধ চলে আসছিল। বেশ কয়েকবার এ নিয়ে শালিশ হলেও কোন সমাধান হয় নি। ঘটনার সময় বিরোধের জেরে আপন ভাইদের হামলার আব্দুল হামিদ কালা ঘটনাস্থলেই মারা যান। অভিযোগের বিষয়ে ছিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না আমি স্কুলে ছিলাম। আমার ভাই ফারুক একই এলাকার ইউনুছ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ওই জায়গাটি বর্গা চাষের জন্য দিয়েছিল। ঘটনার দিন ইউনুস মিয়া ওই জায়গায় হাল চাষ করতে গেলে আব্দুল হামিদ কালা বাঁধা দেন। এক সময় তাদের মধ্যে শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে। হামলার ঘটনা ঘটেনি। আমার ভাই আব্দুল হামিদ কালা হার্টের রোগী ছিলেন। তিনি স্ট্রোক করে মারা যান। জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিবারের এজাহার অনুযায়ী মামলা গ্রহণ করা হবে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পরিবার অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।