শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এ আর সুমন,কিশোরগঞ্জঃ
আমাদের সমাজে একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল যে, আশুরা শুধু শিয়াদের অনুষ্ঠান। আল্লাহর মহান বন্ধু যুগের ইমাম আম্বিয়া কেরামের ধর্মের দায়িত্ব ও বেলায়েত লাভ করি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুফি সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ান বাগী হুজুর প্রমাণ করেছেন যে, পবিত্র আশুরা মুধুমাত্র শিয়াদের নয়, সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রহমত ও বরকতময়।শুধু তাই নয় আল্লাহতালা এই দিনে বিভিন্ন নবী রাসূলদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার সহ নানা ওলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছেন। নিম্নে পবিত্র আশুরার দিনে উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ উপস্থাপন করা হলো-
হিজরি বর্ষের ১ম মাস মহররম, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা।
১. পবিত্র আশুরার দিনেই মহান আল্লাহ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেন এবং সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক হিসেবে আরশে সমাসীন হন।
২. এ দিন আরশে সমাসীন হওয়ার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ্ অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিল এবং সেই অনুষ্ঠানে সকল আদম সন্তানের রূহসমূহকে মহান আল্লাহ্ জিজ্ঞেস করেন, আমি কি তোমাদের প্রভু নই তারা বলল হ্যাঁ আমরা সাক্ষী রইলাম, আপনি আমাদের প্রভু। ৩. আশুরার এ দিনে সর্বপ্রথম বৃষ্টি ও আল্লাহ রহমত দুনিয়াতে বৰ্ষিত হয়।
৪. মহান আল্লাহ এ দিনে মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে তাঁকে বেহেশতে প্রবেশ করান।
৫. মহান আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে এ দিনেই হযরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন।
৬. হযরত আদম (আ.) ৩৯০ বছর কান্নাকাটি করার পর হযরত রাসুল (সা.)-এর উছিলায় আশুরার এ দিনেই আল্লাহ পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভ করেন।
৭. এ আশুরার দিনেই হযরত নূহ (আ.)-এর নৌকা মহাপ্লাবন শেষে জুদী পাহাড়ের পাদদেশে এসে থামে।
৮. এ দিনে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.)-কে নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে রক্ষা করেন।
৯. হযরত আইয়ুব (আ.) দীর্ঘ ১৮ বছর কুষ্ঠ রোগ যন্ত্রণা ভোগের পর আশুরার এ দিনেই আরোগ্য লাভ করেন। ১০. হযরত ইদ্রিস (আ.)-কে এ দিনেই মহান আল্লাহ জান্নাতে উঠিয়ে নেন।
১১. এ দিনে হযরত দাউদ (আ.) আল্লাহ নিকট থেকে ক্ষমা লাভ করেন। ১২. এ দিনে হযরত সোলায়মান (আ.) তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পান।
১৩. হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেটে ৪০ দিন অবস্থানের পর এ দিনেই মুক্ত হন।
১৪. ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া শিশু হযরত মুসা (আ.)-কে এ আশুরার দিনেই সন্তানরূপে গ্রহণ করেন।
১৫. এ দিনে হযরত মুসা (আ.) স্বীয় অনুসারীদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন, অন্যদিকে ফেরাউন সদলবলে সেখানে ডুবে মারা যায়।
১৬. এ দিনে হযরত ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে আশুরার দিনেই তাঁকে মহান আল্লাহ ৪র্থ আসমানে উঠিয়ে নেন। ১৭. হিজরি ৬১ সনের ৩ মহররম হযরত রাসূল (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর ৭২ জন সঙ্গীকে (শিশু ও মহিলাসহ) দুরাচার এজিদের ২২ হাজার সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী কারবালা প্রান্তরে অবরুদ্ধ করে রাখে। ৭ দিন অবরুদ্ধ করে রাখার পর এজিদ বাহিনী আশুরার এ দিনে (১০ মহররম) ইমাম হোসাইন (রা.)-এর পরিবারের ১৭ জন এবং তাঁর ৫৫ জন সঙ্গীকে-সহ মোট ৭২ জনকে নির্মমভাবে শহিদ করে।
১৮. হযরত রাসূল (সা.)-এর রেখে যাওয়া মোহাম্মদী ইসলাম বিশ্বময় প্রচারের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালের এ আশুরার দিনেই সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান দেওয়ানবাগ শরীফ প্রতিষ্ঠা করেন।
উল্লেখিত ঘটনাসমূহ প্রমাণ করে যে, পবিত্র আশুরা নির্দিষ্ট গোত্রের জন্য নয় , বরং সমগ্র সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বরকতময় একটি দিন।
আসুন আমরা সবাই আশুরার এই দিনে মহান আল্লাহর কাছে দয়া ভিক্ষা চাই তিনি যেন দয়া করে তিনার অভিষেকের উসিলায় এবং বিভিন্ন নবী-রাসূল দেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে সম্মানিত করেছেন সেই আশুরার উসিলায় আমাদেরকে যেন মাফ করে দেন এবং হরযত রাসূল (সা.) এর মোহাম্মদী ইসলামের হেরা গুহার শিক্ষা ও আদর্শের চরিত্রে চরিত্রবান হয়ে এবং মানুষ কিভাবে আল্লাহ এবং রাসূলকে পাবেন সেই শিক্ষা ও আদর্শ প্রচার করতে গিয়ে নিষ্ঠুর এজিদ বাহিনীর হাতে ইমাম হোসাইন এবং সঙ্গী সাথী সহ ৭২ জন নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেছেন । তথ্যসূত্র: বড়পীর হযরত আবদুল কাদির জীলানী (রহ.) প্রণীত গুনিয়াতুত্ ত্বালিবীন কিতাব।