শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগরীতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পিংকু-সহ গ্রেফতার ৮ জুড়ীতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে আটক ৮ পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ কর্মী মানিক হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি গ্রেফতার গোবিন্দগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ২৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রংপুর বিএনপি ও আহবায়ক সামুর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে অপপ্রচারের অভিযোগ মামলার বাদির নালিতাবাড়ীতে ভারতীয় মদসহ যুবক আটক কুষ্টিয়ার নিখোজ ২ এএসআই এর লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার এবার প্রকাশ্যে এলেন ইবি শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি গোদাগাড়ীতে বিপুল পরিমান গাঁজা-সহ গ্রেফতার মাদক কারবারী ডালিম আমরণ অনশনে রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা

পাটের বাম্পার ফলনেও ন্যায্য মূল্য পাওয়ার শঙ্কায় চাষিরা,মূল্যবৃদ্ধির দাবি

Reading Time: 2 minutes

রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা:
আগাম বৃষ্টি না হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার নেত্রকোনার বিভিন্ন উপজেলায় সোনালি আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে ক্রমেই পাট চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এবার পাটের ভালো ফলন হওয়ায় পাট চাষিরা খুশি। তবে, বরাবরের তুলনায় এবার ভাল ফলন হওয়ার পরও দাম নিয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা।বিভিন্ন উপজেলা সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই ক্ষেত থেকে পাট কাটার কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করেছে কৃষকরা। ইতিমধ্যে তারা মুক্ত জলাশয়ে জাঁক দেয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়ানো ও শুকানো কাজ শেষ করে বিক্রির চিন্তা করছেন। কিন্তু বাজারে পাটের সঠিক মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ কৃষকেরা পাটের সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ও হতাশায় পড়েছেন।বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, মদনসহ কয়েকটি উপজেলার পাট চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাট চাষ করে কয়েক বছর আগেও চাষিরা লোকসানে পড়েছিলেন। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে অন্যান্য ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যারা স্বল্প পরিসরে আবাদ ধরে রেখেছিলেন, তারাই লাভবান হয়েছেন। তাদের উৎসাহে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যরাও আবারো পাট চাষে আগ্রহী হয়েছিলেন। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমের শুরুতেই চাষিরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। এতে করে পাটের আবাদ বেড়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু এ বছর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন পাট চাষিরা।বারহাট্টা উপজেলার পাটচাষি জজ মিয়া বলেন, আমি এবার ৫০শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছি। প্রতি বছরই আমি পাট চাষ করে থাকি। বরাবরের তুলনায় এবার ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে পাটের দাম অনেক কম। এতে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছি।নেত্রকোনা সদর উপজেলার তাঁতিয়র এলাকার রতন সরকার নামে অন্য পাটচাষি বলেন, গত বছর আমি দুই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে কিছুটা লাভ করতে পেরে এবার আবাদ বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে গতবারের থেকে এবার পাটের দাম ১ হাজার টাকা কমে গেছে। ফলে পাটের উৎপদন খরচ আর বদলি খরচ বাবদ ৫০০ টাকা খরচসহ বর্তমানে পাটের যে বাজার মূল্য হয়েছে তাতে করে আমাকে লোকশানের মুখে পড়তে হবে। সরকার যদি পাটের দাম না বাড়ায় তাহলে আমাদের মত পাটচাষিদের পাটের আবাদ করা থেকে সরে আসতে হবে।পাটের ফলন ভাল হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার মৌসুমি শ্রমিকদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। এক আঁটি জাঁক দেওয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়িয়ে ২০-২৫ টাকা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে দিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা টাকার মতো আয় হয় তাদের।পাট ব্যবসায়ী রাজ্জাক হোসেন বলেন, গত বছরে কেনা পাট আজও গোডাউনে ভরা। অনেক ব্যবসায়ী গত বছরের পাট বিক্রি করতে পারেনি। এজন্য এবছর ঝুঁকি নিচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। পাট চাষি ও ব্যবসায়ীরা উভয়েই বিপাকে পড়েছে। কৃষকদের লোকসান হচ্ছে, খরচের টাকাও তুলতে পারছে না তারা। গতবছর এসময় ২৫০০ টাকা মণ ছিলো, এবছর প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে৷জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জানান, জেলায় এ বছর ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে এসময়ে প্রতিমণ পাটের দাম ছিলো ২৫০০-২৬০০ টাকা। গত বছরের সেই পাট ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পারেননি। ব্যবসায়ীরা লোকসানের ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য পাট ক্রয়ে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম। ফলে পাটচাষিদের লোকসান হচ্ছে, দাম পাচ্ছেন অনেক কম। বর্তমানে প্রতি মণ পাট ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা বিক্রি করছে কৃষক। প্রতি বিঘায় পাট উৎপাদন হচ্ছে ৬-৭ মণ, যেখানে উৎপাদন হওয়ার কথা ১০-১২ মণ। সবমিলিয়ে পাট চাষিরা লোকসানের মধ্যে রয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com