বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা:
পাবনার ঈশ্বরদীতে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমের চলমান পক্ষকালের অধিক সময় তীব্র তাপদাহ বিরাজ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে। ফলে কার্যত ঈশ্বরদীর জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন জানান, আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় ঈশ্বরদীতে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা অতি তীব্র তাপপ্রভাব। তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে।
প্রকৃতিতে বৈরী আবহাওয়া দীর্ঘদিন স্থায়ী হওয়ায় ক্ষেত-খামার নিয়ে চরম চিন্তিত কৃষকরা। তারা জানান, মাঠে তেল ও ডাল বীজে বিপর্যয় হতে পারে। বিশেষ করে পাট, তিল, বাদামের ফলন হুমকির মুখে। চৈত্রের কাঠফাটা রোদের পর বৈশাখের মধ্যবর্তীতেও তাপমাত্রা না কমায় কাবু হয়ে যাচ্ছে বয়স্করা। প্রায় মাসব্যাপী তীব্র তাপদাহ চলছে প্রকৃতিতে। এ দিকে মাসজুড়ে ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপদাহ। এতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে ঘন ঘন লোডশেডিং। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। ঝরে যাচ্ছে মৌসুমি ফল, বিশেষ করে আম, লিচু ও বাদাম।
প্রতিদিনই সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত একই মাত্রায় থাকছে তাপদাহ। সূর্য একটু উপরে উঠতেই মনে হয় যেন আগুনের স্ফুলিঙ্গ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে চাচ্ছে না গ্রামের মানুষ। তাই দুপুর গড়াতেই পথ-ঘাট প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে।
এ দিকে তীব্র তাপদাহের প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ হচ্ছে রোগীর সারি। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি।
তীব্র রোদ ও গুমোট আবহাওয়ায় মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। অনেকে সামান্য স্বস্তির জন্য ছুটে চলছেন গাছের ছায়াতলে। তীব্র রোদ ও গরমে স্বস্তি পেতে অনেকেই ছুটছেন আখের রস, তরমুজ, লেবুর শরবত, ঠাণ্ডা মাঠা, শসা ও ডাবের পানির দিকে। কনফেকশনারি থেকে শুরু করে বিপণী বিতানগুলোতে আইসক্রিম ও কোমল পানীয় বেচা-বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।
তাপদাহের কারণে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসন থেকে হিট অ্যালার্ট এবং তাপদাহ থেকে রক্ষায় করণীয় বিষয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। তীব্র তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ফলে ঘরের মধ্যেও স্বস্তিতে থাকতে পারছেন পাবনা জেলার বাসিন্দারা।