বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন

News Headline :
ইউপি চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের মাটি সরে গিয়ে দূর্ভোগে জনগণের সেবা দেওয়ার জন্যই সরকার আমাকে পাঠিয়েছেঃ-নওগাঁর নবাগত ডিসি রাজশাহীতে শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে শুটার রুবেল পাবনায় সাংবাদিকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময় করলেন নবাগত জেলা প্রশাসক মধুপুরে বৈষম্যবিরোধী ও কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে  বিএনপির দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠিত  পাবনার হেমায়েতপুরে কারামুক্ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধন বাঘাইছড়িতে বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার ডোমারে সীরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত পাবনার সুজানগরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পথসভা অনুষ্ঠিত

ফলাফলের সাফল্যে ধস, দেশ সেরা গৌরব হারাচ্ছে রাজশাহী কলেজ

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি সূচকে প্রতিবারই সেরার মুকুট অর্জন করেছে রাজশাহী কলেজ। তবে গত দুই বছরে সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারে নি দেশের বাছাই করা মেধাবীদের এই কলেজ। আর এর পেছনে প্রতিষ্ঠান প্রশাসনে নেতৃত্বের দূর্বলতাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সমাধানে কার্যকরি উদ্যোগ তো নেই বরং আগামীতেও ফলাফলে ধসের শঙ্কা প্রকাশ অধ্যক্ষের! ফলশ্রæতিতে গত দুই বছরে দেশসেরা হওয়ার গৌরব যেমন হারিয়েছে, তেমনি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে রাজশাহী কলেজের ধারাবাহিক সাফল্যেও ধস নেমেছে। এইচএসসি শিক্ষার্থীদের বিশেষায়িত ব্যবস্থাপনার কথা থাকলেও কলেজ প্রশাসনের উদাসীনতা ও অবহেলায় শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও কলেজের প্রতি ভরসা হারিয়ে ফেলছেন। এতে পরিক্ষায় শতভাগ জিপিএ-৫ সহ দেশের শিক্ষায় ‘মডেল’ হিসেবে পরিচিতির নানা সূচকে দেশসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করলেও এখন তা হারাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কলেজটির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. হবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে শতভাগ জিপিএ-৫, এর গৌরব অর্জন করেছে রাজশাহী কলেজ। এর পেছনে অধ্যক্ষ হিসেবে হবিবুর রহমানের নেতৃত্বে কলেজ প্রশাসনের যে প্রচেষ্টা ছিলো, তা এখন আর দৃশ্যমান হয় না। নানা অব্যবস্থাপনায় শিক্ষা পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পরিক্ষার্থীদের ফলাফলে। রাজশাহী কলেজের পরিক্ষার্থীদের ফলাফল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অধ্যাপক মোহা. হবিবুর রহমান অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব শেষ করার পরের বছর থেকেই শিক্ষার্থীদের ফলাফলে ধস নামতে শুরু করেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালে রাজশাহী কলেজে শতভাগ জিপিএ-৫ অর্জিত হয়েছে। এরপর ২০২২ সালে ১৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। এবার ৩৭ জন মেধাবী শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায় নি। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগেরই ১৬ জন।
বর্তমান অধ্যক্ষের শঙ্কা ২০২৪ সালেও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ফলাফল করতে পারবে না। কারণ হিসেবে তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন। জানা গেছে, রাজশাহী কলেজ থেকে এবার ৪৪৯ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। পাশের হার শতভাগ। কিন্তু জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪৭ জন শিক্ষার্থী। ‘এ’ পেয়েছে ৩৬ জন এবং ‘এ’ মাইনাস ১ জন। রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল খালেক বলেন, রাজশাহী কলেজের সকল শিক্ষার্থীরাই মেধাবী। সর্বোচ্চ সফলতা দেখিয়েই এই কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। সেই শিক্ষার্থীরা ‘এ’ প্লাস না পাওয়া খুবই দুঃখজনক। এটা কখনোই প্রত্যাশিত নয়। তবে আমরা অনেক শিক্ষার্থীকেই ক্লাস রুমে আনতে পারি নি। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই রাজশাহীর বাইরের। একারণে অভিভাবকদের ডেকেও পাওয়া যায় না। আর কলেজ প্রশাসনের দুর্বলতা থাকলেও থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাজশাহীর সুশীল সমাজের পরামর্শও কামনা করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘এ’ প্লাস বঞ্চিত এক শিক্ষার্থী জানান, পূর্বে শিক্ষকদের যে রকম যতœ নেয়া হতো বলে শুনেছি, আমরা তেমন পায় নি। ক্লাসের বাইরে অনেক সময় ইচ্ছে না থাকলেও শিক্ষকদের নির্দেশে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে হয়েছে। এটার একটা নেতিবাচক প্রভাব আছে। এছাড়া ভালো রেজাল্ট করে ভর্তি হয়েছি রাজশাহী কলেজে। একারণে অন্যরকম আত্মবিশ্বাস ছিলো। কিন্তু কিভাবে ‘এ’ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলাম বুঝতে পারছি না। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী আখি সিরাজউদ্দীন বলেন, এবার শর্ট সিলেবাসসহ কিছু ঝামেলা ছিলো। তবে কলেজের বাইরেও আমি কোচিং করেছি। আমার ফলাফল আশানরুপই হয়েছে। এ বিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, রাজশাহী কলেজ শিক্ষা নগরীর ঐতিহ্যবাহী কলেজ। এই কলেজ টানা চারবার দেশসেরা হওয়ার পরে গত দুই বছর সে ধারাবাহিকতা হারাচ্ছে এটা দুঃখজনক। সঙ্গে এটাও দুঃখজনক যে, এখানে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে নেয়া হয়। যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শতভাগ জিপিএ-৫ থাকে। কিন্তু গত দুই বছরে সে ধারাবাহিকতাও হারিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের এই নিম্নমুখীতার বিপরীতে কলেজ প্রশাসন কিংবা শিক্ষকদের কোন অজুহাতই মেনে নেয়া যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com