রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন, শেরপুর :
দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে মধুপুরের আনারসের রসালো স্বাদ। শেরপুরের গারো পাহাড়ে এবার মধুপুরের সেই রসালো আনারসের স্বাদকে ছড়িয়ে দিতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে আনারস চাষ। মধুপুরের আনারসচাষি পিটার ডালবট নামে এক গারো আদিবাসী ঝিনাইগাতি উপজেলার উত্তর বাঁকাক‚ড়া গ্রামে তার শ্বশুর হালেন্দ্র সাংমার ছয় একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এ আনারস চাষ শুরু করেন। প্রথম অবস্থায় একটু চিন্তায় পড়লেও পরে ফলন দেখে আশায় বুকে বাঁধেন পিটার। এ আনারস যখন পাকা শুরু হয়, তখন তিনি দেখেন মধুপুরের চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু ও রসালো হয়েছে। পুরো বাগানের প্রায় সোয়া লাখ আনারস ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। ফলে আশপাশের অনেকেই এ বাগান দেখতে এবং চাষাবাদের আগ্রহ নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন । পিটার জানান, গত বছরের শুরুতে তার শ্বশুরের ছয় একর জমিতে প্রায় সোয়া লাখ চারা রোপণ করেন। বিগত প্রায় দেড় বছরে ওইসব চারা থেকে এক লাখ ১০ হাজার গাছে আনারস ফলন হয়। পুরো বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ, সেচ, সার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় প্রায় ১১ লাখ টাকা। তার এ পুরো বাগান মধুপুরের এক ব্যবসায়ীর কাছে ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। তবে বন্যহাতির কারণে তার বাগানের প্রায় ২০ হাজার টাকার আনারস ক্ষতি হয়েছে । সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং হাতির আক্রমণ ঠেকাতে পারলে মুধুপুরের পর এ গারো পাহাড়ের জমিতে আনারস চাষ করে স্থানীয়দের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি দেশের লাভজনক অর্থকরী ফলে রূপান্তর হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে । প্রথম অবস্থায় স্থানীয়রা পিটারের বাগান দেখে সন্দিহান ছিলেন। পরবর্তীকালে ফলন ভালো দেখে গ্রামের মানুষ আশার আলো দেখেন এবং অনেকেই তা দেখে আগ্রহ প্রকাশ করছেন তারাও পাহাড়ি পতিত জমিতে এ আনারস চাষ করবেন। এছাড়া দূর-দূরান্তের অনেকেই এ বাগানের কথা শুনে বাগান দেখতে আসছেন এবং আনারস খেয়ে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ঢালুতে একসময়কার পতিত জমিতে এখন সারি সারি আনারস বাগানে থরে থরে পেকে আছে মধুপুরের জানের আনারস। রসে টইটুম্বর এ আনারস। এছাড়া এ বাগানে পরিচর্যার কাজ করে অনেকেই আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক। ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, পাহাড়ি মাটি মূলত এসিডিক। আর এ মাটিতে আনারস চাষের খুবই উপযোগী। উচ্চমূল্যের এ ফল চাষ করে পাহাড়ের অনাবাদি জমি যেমন চাষের আওতায় আসবে, তেমনি পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষিতে নতুন অর্থকরী ফসল হিসেবেই আনারসের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে ।