শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন

News Headline :
কুষ্টিয়ার নিখোজ ২ এএসআই এর লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার এবার প্রকাশ্যে এলেন ইবি শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি গোদাগাড়ীতে বিপুল পরিমান গাঁজা-সহ গ্রেফতার মাদক কারবারী ডালিম আমরণ অনশনে রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা পুলিশ কর্মকর্তা বিজয়-উৎপলকে ধরলেই মিলবে কাজেম হত্যার উত্তর: দাবি চিকিৎসকদের সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে  বিক্ষোভ ও মানববন্ধন  দেশদ্রোহী খুনি হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে–আহসান হাবিব লিংকন রংপুরে জমি লিখে না দেয়া মাকে বেধড়ক পেঠালো ছেলে ও ছেলের বউরা শ্রীবরদীতে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এতিম ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ মান্দায় মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাড়ে ৩শো গাছ উপড়ে ও ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ

ভরা মৌসুমেও মাছ না পাওয়ায় হতাশ জেলেরা

Reading Time: 2 minutes

রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা:
নদ-নদী এবং হাওরাঞ্চল খ্যাত নেত্রকোনা জেলা। জেলার নদ-নদী এবং হাওরগুলোতে পাওয়া যেতো প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। আর এসব মাছ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো। তবে এ বছর ভরা মৌসুমেও মাছের খুব একটা দেখা মিলছে না।মাছের পরিমান কমে যাওয়ায়, স্থানীয় বাজারগুলোতে বরাবরের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে মাছের দাম। ফলে চাহিদা বেড়েছে পুকুরে চাষ করা মাছের। নদ-নদী কিংবা হাওরে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন জেলার শত শত জেলে পরিবার।সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বর্ষাকাল মাছের মৌসুম। এ সময় নদ-নদী ও হাওরগুলোতে মাছের প্রজননের ফলে বংশবিস্তার ঘটায়। কিন্তু এমন সময় নিষিদ্ধ বিভিন্ন প্রকার জাল (কারেন্ট জাল, ভরজাল, ভেসাল জাল, চায়না দুয়ারি জাল) ব্যবহার করে পোনা মাছ নিধন শুরু করেন স্থানীয়রা। ফলে দিয়েছে মাছের সংকট। এবার ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ মাছ মিলছে না। বিশেষ করে ভাদ্র মাসের শেষের দিকে পানি কমতে শুরু করে এবং আশ্বিন মাসের প্রথম থেকেই প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়ে। কিন্তু এ বছর জেলেরা নদ-নদী ও হাওরে তেমন মাছ পাচ্ছেন না। এছাড়া বেশিরভাগ উন্মুক্ত জলাশয় প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় সেখানে জেলে ও সাধারণ মানুষকে মাছ ধরতে না দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলেরা।জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, জেলায় সোমেশ্বরী, মগড়া, কংস, ধনুসহ ছোট বড় মিলিয়ে ৪৭টি নদ-নদী এবং ডিঙাপোতা, বোয়ালী, সোনাডুবি, গাগলাজুর, জালিয়ার হাওরসহ অন্তত ১৩৪টি হাওর রয়েছে। এসব হাওর থেকে প্রতিবছর শতকরা ৪৫ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় এবং বাকি ৫৫ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় বিভিন্ন পুকুর থেকে।জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের জেলে পাড়ার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী কাঞ্চন বর্মণ বলেন, আগে এমন সময় সোমেশ্বরী নদীতে যে মাছ পাওয়া যেতো তার সিকি ভাগও এখন পাচ্ছি না। বুড়ো বয়সেও সারা রাত জাল আর নৌকা নিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করি, কিন্তু মাছ মিলে খুবই কম। সামান্য যা পাই তা দিয়ে জীবন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাওর ও বিলগুলো অন্যদের দখলে। তাই সেখানে আমাদের মাছ ধরতে দেওয়া হয় না।জেলা শহরের বড় বাজরের মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এখন হাওর, নদী, বিলগুলোতে প্রচুর মাছ পাওয়ার কথা। কিন্তু মাছ তেমন একটা নেই। তাই বাজারে যা আসে অধিকাংশই পুকুরের মাছ। তাও আবার এসব মাছের দামও অনেক বেশি। হাওর, নদী, বিলের মাছ কম থাকার কারণেই পুকুরে মাছের দাম বেড়েছে।মাছে ক্রেতা শহরের নিউটাউন এলকার বাসিন্দা দুলাল বিশ্বাস বলেন, বর্তমান বাজারে দেশি মাছ যেন এখন সোনার হরিণ। ফিসারীতে চাষ করা মাছও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। কোন বাজারেই নূন্যতম ৩০০ টাকা কেজি ছাড়া মাছ কিনাই যায়না। দিন দিন আমরা প্রাকৃতিক জলাশয়ে বেড়ে ওঠা মাছের স্বাদ ভুলে যাচ্ছি। এক সময় আমাদের এলাকার নদী, নালা, খাল-বিল ও হাওরগুলোতে প্রচুর পরিমাণে শিং, কই, মাগুর, গুতুম, টেংরা, বোয়াল, পাবদা, আইড়, শোল, বাতাই, রাণী মাছ, পুঁটি, টাকি, চান্দা, গজার মাছ পাওয়া যেতো। এসব মাছ ছিল খুব সুস্বাদু। বর্তমানে এসব মাছ নেই বললেই চলে। যদিও অল্প পরিমানে পাওয়া যায় তাও কিনতে হয় চড়া দামে।জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর বলেন, নানা কারণেই দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত চার মাস দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ না ধরে প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণের কথা থাকলেও কেউ তা মানছেন না।অসাধু ব্যবসায়ীরা কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরার ফলে কমে যাচ্ছে মাছের প্রজন্ম। তাই পুকুরে চাষ করা মাছই এখন ভরসা। তবে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নিষিদ্ধ জাল উদ্ধারসহ জড়িতদের জরিমানা করা হচ্ছে।তিনি জানান, পুকুরে মাছ উৎপাদন বেশি হলেও জেলার বাসিন্দাদের মাছের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com