শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী মহানগরীর মধ্যে মাদকের অন্যত্তম ঘাটি মতিহার থানা অঞ্চল। এই অঞ্চলে ছোট বড় মিলে প্রায় ১৯৯ জন মাদক কারবারী রয়েছে। তবে মাদক কারবারীদের মূল হোতারা অধিকাংশ সময়ই থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যের সাথে চিহিৃত মাদক কারবারীদের একটি অংশ বিশেষ সখ্যতা থাকায় মাদকের কারবার দিনে দিনে বাড়ছে-এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তারপরেও নতুন ওসি যোগদান করার পর এ অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
এই থানা অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকাতেই হাত বাড়ালেই মেলে মাদক। সেই কয়েক যুগ ধরে এ অঞ্চলটি মাদকের স্বর্গরাজ্য। থানায় নতুন ওসি যোগদান করার পর কিছুদিন কারবার চলে গোপনে। তারপর অদৃশ্য কারনে প্রকাশ্যেই চলে এই কারবার।
এ অঞ্চলে গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিলের কোন কমতি নেই। হাত বাড়ালেই মেলে এসব মাদক। এছাড়া মতিহার থানার নাকের ডগায় পলি, রোকশানা, রোহিসহ বেশ কয়েকজন প্রকাশ্যে দিন-রাত বিক্রি করছে গাঁজা ইয়াবা। ওই এলাকার স্থানীয়দের অভিযোগ, থানায় তথ্য দিলেও পুলিশ ধরেনা। আর যদি পুলিশ আসে তার আগেই জেনে যায় মাদক কারবারীরা।
বর্তমানে মতিহার থানা অঞ্চলে এক বোতল ফেনসিডিলের দাম ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা। আর এই টাকা যোগাড় করতে দিন রাত এক করে ফেলছে মাদক সেবিরা। কম খরচে নেশা পুশিয়ে নিতে অনেকে সেবন করছে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা ও টাফএ্যানটাডল ট্যাবলেট। মাদকের টাকা যোগাড় করতে চুরি ছিনতাই, ব্ল্যাকমেইলসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
এসব এলাকার মোড়ে দোকান ঘরে ও একাধিক বাড়িতে চুরি ঘটনা ঘটলেও আটক হচ্ছেনা চোর। উদ্ধার হচ্ছে না চুরির মালামাল। উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা নিয়েই বসবাস করছেন এখানকার বাসিন্দারা।
মতিহার অঞ্চলে দির্ঘদিন যাবত পুলিশের উল্লেখযোগ্য অভিযান নেই বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযানের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে মাঝে মধ্যে মাদক সেবিদের ধরে ব্যবসায়ী বানিয়ে ১০/১৫ পিস ইয়াবা, ৫/৭ গ্রাম হেরোইন, ১০০/২০০ গ্রাম গাঁজা দিয়ে আদালতে চালান দেয়া হচ্ছে। এই রকম উদাহরনের শেষ নেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একাধিক মাদক মামলার আসামী ও মূল মাদক কারবারীরা প্রকাশ্যেই বুক ফুলিয়ে বিক্রি করছে সকল প্রকার মাদকদ্রব্য।
জাহাজ ঘাট মোড়ে নামে মাত্র ঔষুধের ফার্মেসী খুলে নাম যশ কামিয়েছেস জনৈক ডাক্তার। ওই দোকান আবার সারা রাত খোলা রেখে কখনো সাজে পুলিশের সোর্স, কখনো মাদক কারবারী, কখনো ডাঃ সাহেব, কখনো মাদক কারবারীর মাসহারা তুলে অসাধু কিছু পুলিশ অফিসারদের দেয়। মতিহার থানায় নতুন কিংবা পুরাতন পুলিশ যে পোস্টিং আসে তাদেরকে এই ঔষুধের ফার্মেসির মালিক ডাঃ সাহেবের সাথে সখ্যতা রাখতে হয়। কারন পুলিশের সাথে মাদক কারবারীদের সখ্যতা করিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা পালন করেন তিনি ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয়রা জানান, মতিহার থানা এলাকার মধ্যে জাহাজ ঘাট মহব্বতের ঘাট, সাতবাড়িয়া, ডাসমারী স্কুল মোড়ের পেছনের এলাকা, চর-শ্যামপুর (মিজানের মোড়) এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারীদের কাছে পুলিশের মাসোহারা বন্ধ হলেই, বন্ধ হবে মাদকের কারবার।
মতিহার থানা এলাকার উল্লেখযোগ্য মাদক কারবারীদের মধ্যে রয়েছে- ডাসমারী এলাকার মৃত মুক্তারের ছেলে পালা। তার সহযোগী মাদক কারবারী সাবদুল, কামরুল, সোহেল (জানু), সুমন, রশিদ, সাকিব, শাহজামাল, ডাসমারী স্কুলের পেছনে জাকা ও মিলন। নাজিমের ছেলে মাদক কারবারী জামাল। তার সহযোগীরা হলো- জাকা, জামিল, সাক্কার, রফিক, ছাদেক ও মাসুম। একই এলাকার মালেক, তার স্ত্রী হানুফা, তার ছেলে হাবিল ও কাবিল। তেল রফিক ও তার স্ত্রী। ডাসামরী গোরস্থান মোড়ের চান্দু বাবু। একই এলাকার স্কুলের পেছনে রহমানের ছেলে মাদকের ডিলার জাকা। এাড়াও চরের ইমরানের ছেলে মাদকের গডফাদার আক্কাস গত প্রায় ৩ বছর যাবত গা ঢাকা দিয়ে আছে। বর্তমানে অবস্থান করছে কাটাখালী থানাধিন পদ্মার মিডিল চরে।