রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আব্দুল্লাহ আল মামুন,খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গার তবলছড়িতে পারিবারিক কলহের জের ধরে মেয়ে জামাই ও তার সহযোগীদের হামলায় আনোয়ারা (৪৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।সোমবার(৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়নের গৌরাঙ্গ পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।আহতের আত্ম চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতের পাঁজরে ও পিঠে ১৮টি সেলাই দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।
জানা যায়, হামলাকারীদের মূল হোতা মেয়ের জামাই মো. কামাল উদ্দিন(২৫) পিতা-মো. আবু তাহের। সাথে ছিল কামালের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম(৪০)। অজ্ঞাত মুখোশধারী আরো ৪/৫জন। তারা প্রত্যেকে ঘটনাস্থল থেকে ১৩কিঃমিঃ দূরত্বে পানছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। কামাল ঘটনার দিন সোমবার দুপুরে আদালত চত্তরে তার শশুরের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত ছিলো। তাছাড়া মোবাইলে হত্যার হুমকিও প্রদান করে।স্থানীয় এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল ১৩০/২০২২ মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২২/৭/২০১৯ সালে পানছড়ির উল্টাছড়ি ইউনিয়নের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা মো. আবু তাহেরের ছেলে মো. কামাল উদ্দিনের সাথে, তবলছড়ির গৌরাঙ্গপাড়ার মো. শফিকুল ইসলামের মেয়ে মোছা. শাহিনুর বেগম(২৩) এর বিয়ে হয়। তাদের সাড়ে ৩বছর বয়সী ১টি কন্যা ও ১৩মাস বয়সী ১টি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিবাহের প্রথম রাত থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামী তার স্ত্রীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে গরীব পিতা কয়েক দফায় ১লাখ টাকা প্রদান করেন। এরপর পূণরায় আরো ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে শাহিনুর তার দরিদ্র কৃষক পিতার কথা চিন্তা করে টাকা চাইতে অপারগতা প্রকাশ করার সাথে সাথে গত ১৭/৬/২০২২ইং কামাল তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে শিশু সন্তানসহ এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ও টাকা না দিলে তালাক দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে তার বাবা-মা তাকে মাটিরাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
পরবর্তীতে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য শশুর বাড়ীর লোকজনকে মোবাইল ফোনে ও প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে। এব্যাপারে মাটিরাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।প্রতিবেশী ফুলবানু(৫৫) বলেন, সোমবার সন্ধ্যা রাতে বৃষ্টি পড়ছিল। এসময় চিৎকার শুনে আমার ছেলের বউ কোহিনুর(৩৫) এগিয়ে গেলে মেয়ে জামাই কামালসহ তার ভগ্নিপতি ও আরো ৩/৪জন তার শাশুড়িকে কুপিয়ে জখম করতে দেখে সেও চিৎকার করতে থাকে। এসময় তাদের আত্মচিৎকারে আমি ও প্রতিবেশিরা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।আহত আনোয়ারা বেগম জানান, তার নেশাগ্রস্ত মেয়ে জামাই কামাল হত্যার উদ্দেশ্যে হঠাৎ ৫/৭জন সহযোগীদের নিয়ে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় আমার স্বামী বাসায় ছিল না। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার বুকে-পিঠে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।এব্যাপারে তবলছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনার বিষয়ে অবগত ছিলাম না। আহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম আমাকে কল দিয়েছিল। ব্যাস্ততার কারণে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি নাই। জামাই কর্তৃক শাশুড়িকে হত্যার উদ্দেশ্যে আহত করার ঘটনা অত্যান্ত দুঃখজনক।