রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর :
## সংরক্ষিত মহিলা আসন, @ লবিং-তদবিরে ঢাকামুখী অনেকেই, @ ত্যাগীদের মূল্যায়নের দাবি
@ রাজনৈতিক কর্মকা-ের পাশাপাশি যাদের জনসম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য করা উচিত- তৃণমূল বলছেন নেতাকর্মী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ শেষ গত ৭ জানুয়ারি। গতকাল মঙ্গলবার সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনী তফসীলের ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে রংপুরের অর্ন্তত ২০জন নারী নেত্রী দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই কেন্দ্রীয় লবিং-তদবিরে জন্য ঢাকা মূখী হয়েছেন। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবন-বৃত্তান্ত উপস্থাপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিক্রির প্রথম দিনে সংরক্ষিত আসনে তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা বেগম রানী সহ ১৩ জন রংপুর থেকে মনোনয়ন কিনেছেন।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, সংসদে যে দল বা জোট যতগুলো আসন পাবে, তার আনুপাতিক হারে সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টন হবে। বর্তমানে ৩০০ আসনের সংসদে ৫০টি নারী আসন সংরক্ষিত আছে। অর্থাৎ প্রতি ছয়টি আসনের বিপরীতে একটি করে নারী আসন রয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের নির্বাচন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবার পরেই সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) হতে রংপুর মহানগর ও জেলার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীরা সরব হয়ে উঠেছেন। তারা অনেকেই কেন্দ্রীয় লবিং-তদবিরে জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবন-বৃত্তান্ত উপস্থাপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এর আগে নবম জাতীয় সংসদে রংপুরে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য না থাকলেও দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ছিলেন রংপুর থেকে আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও জাতীয় পার্টির সাহানারা বেগম। একাদশে জাতীয় সংসদে রংপুর থেকে কেউ সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পাননি। এবার সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার রংপুরের চেয়ারম্যান রোজি রহমান, মিঠাপুকুর আসনের সাবেক এমপি এইচএন আশিকুর রহমানের স্ত্রী রেহেনা আশিকুর রহমান, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রংপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের নির্বাহী সদস্য, জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পারভীন আক্তার, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও নারী চিকিৎসক শর্মিলা সরকার রুমা, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুমনা আক্তার লিলি, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লতিফা শওকত, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলেয়া খাতুন লাভলী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরতুজা মনসুর, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. জাকিয়া সুলতানা চৈতি, রংপুর জেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াছ আহমেদের সহধর্মিণী উম্মে রুহানী কোকিলা, রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ফরিদা কালাম, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজুর সহধর্মিণী ও কারমাইকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিনতে হুসাইন নাসরিন বানু, মহানগর মহিলা লীগের সভাপতি মমতাজ বেগম প্রমুখ। রংপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করতে ত্যাগী মহিলা নেত্রীরা মাঠে ব্যাপক জনসংযোগ করেছেন। বাড়ি বাড়ি নৌকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভোট চেয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। তাই আওয়ামী লীগের অবস্থান আগের থেকে অনেক ভালো বলে দাবি করছেন তারা। একারণে রংপুর থেকে একাধিক সংরক্ষিত আসলে মহিলা সংসদ সদস্য করার দাবি জানান তারা। তবে সচেতন রংপুরবাসী মনে করেন, যেসকল নারী নেত্রী রাজনৈতিক কর্মকা-ের পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য করা উচিত। এতে করে স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি সংসদ অধিকতর কার্যকর ও গতিশীল হবে। যারা পরীক্ষিত নেত্রী ও স্থানীয় অধিবাসীদের সামগ্রী উন্নয়নে কাজ করতে পারবে, সংসদে তাদের পক্ষে আওয়াজ তুলতে পারবে এমন নারী সংসদে গেলে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হবে।