শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
Reading Time: 3 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে গতকাল সোমবার। সারাদেশের ন্যায় রংপুরের ৬টি আসনেও প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ওয়াকার্স পার্টি পাটি, এনপিপি, কংগ্রেস, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ সহ বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এবারের ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। এর মধ্যে ৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ২৭ জন দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। সোমবার রংপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান প্রার্থীদের এই প্রতীক বরাদ্দ প্রদান করেন। এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পরেই প্রার্থীরা সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। মাইকিং ও স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে রংপুর জেলার ৬টি নির্বাচনী এলাকার হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লাসহ সর্বত্রই। সোমবার রংপুর মহানগরীসহ রংপুর সদর-৩, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) ও রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাট-বাজারে পোস্টার লাগানো শুরু হয়েছে। মাইকিং করে চলছে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা। বাজানো হচ্ছে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়নমূলক গান। অনেক জায়গায় চলছে আলোচনা ও মিছিল। দলীয় নেতাকর্মীসহ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকের মাঝে উৎসব দেখা দিয়েছে। রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রচারণা শুরু করেছি। নির্বাচনী সকল আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। রংপুর- ২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো : আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতার স্বার্থে সারাদেশের মতো রংপুর ২ (বদরগঞ্জ -তারাগঞ্জ) আসনের মানুষ নৌকায় ভোট দিবেন’। তিনি আরও বলেন, গর্বের সঙ্গে আমরাও বলতে পারি বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলার মানুষ স্মার্ট নাগরিক।আমার এই মানুষ গুলোর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আছে।তাঁরা উন্নয়নের স্বার্থে আবারও নৌকাকে বিজয়ী করবে।এবং এবারও বিপুল ভোটে নৌকার বিজয়ের মধ্য দিয়ে এই আসনটি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই। রংপুর জেলা প্রশাসক ও রিটানির্ং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, রংপুর-১ (গংগাচড়া-সিটির আংশিক) আসনে ৯ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির হোসেন মকবুল শাহরিয়ার লাঙ্গল, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির বখতিয়ার হোসেন হাতুড়ি, তৃণমূল বিএনপির বদরুদ্দোজা চৌধুরী সোনালী আশঁ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের শ্যামলী রায় ডাব, স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু কেতলি, মশিউর রহমান রাঙ্গা ট্রাক, শাহিনুর রহমান ঈগল, মোশাররফ হোসেন মোড়া প্রতীক। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ্যাড. রেজাউল করিম রাজু জোটগত কারণে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে ৩ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। যে প্রতীক পেলেন তারা- আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মো. চৌধুরী ডিউক নৌকা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মন্ডল লাঙ্গল, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার বিটু ট্রাক প্রতীক ।
রংপুর-৩ (সিটি কর্পোরেশন-সদর) আসনে ৬ প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এরমধ্যে জাতীয় পার্টির গোলাম মোহাম্মদ কাদের লাঙ্গল, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু একতারা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ডাব, জাসদের শহিদুল ইসলাম মশাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম আম, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী ঈগল প্রতীক বরাদ্দ পান। রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে ৩ জন দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের টিপু মুনশি নৌকা, জাতীয় পার্টির সেলিম মোস্তফা লাঙ্গল এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের সিরাজুল ইসলাম ডাব প্রতীক পেয়েছেন। রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৮ জন প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের রাশেক রহমান নৌকা, জাতীয় পার্টির আনিসুর রহমান লাঙ্গল, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের আব্দুল হালিম মন্ডল গামছা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহবুবার রহমান ডাব, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া একতারা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের এনামুল হক চেয়ার বিএনএফ এর আব্দুল বাতেন টেলিভিশন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার ট্রাক প্রতীক পেয়েছেন। রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে দু’জন স্বতন্ত্র ও পাঁচজন দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিরিন শারমিন চৌধুরী নৌকা, জাতীয় পার্টির নুর আলম মিয়া লাঙ্গল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির জাকারিয়া হোসেন হাতঘড়ি, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহবুল আলম ডাব, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হুমায়ুন ইজাজ আম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ট্রাক ও তাকিয়া জাহান চৌধুরী কাচি প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ প্রতীক বরাদ্দ দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। রংপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর জেলার ছয়টি আসনে ৪৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে ১০ জনের মনোনয়ন বাতিল এবং ৩৯ জনের বৈধ হয়। নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পায় আরও সাতজন। রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ছয়টি আসন থেকে ১০ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। সোমবার প্রতীক বরাদ্দের দিনে চূড়ান্ত হওয়া ৩৬ প্রার্থীর মধ্যে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে রংপুর-১ আসনে নয়জন, রংপুর-২ আসনে তিনজন, রংপুর-৩ আসনে ছয়জন, রংপুর-৪ আসনে তিনজন, রংপুর-৫ আসনে আটজন এবং রংপুর-৬ আসনে সাতজনসহ মোট ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।