শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী :
রাজশাহী মহানগরীর পঞ্চবটি, খরবোনা, কেদুর মোড়, হাদির মোড় শহীদ মিনার ও তালাইমারী এলাকা মাদকের স্বর্গরাজ্য পরিনত হয়েছে। এসব এলাকায় হাত বাড়ালেই মেলে হেরোইন, প্যাথেডিন, ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল। ২৪ ঘন্টাই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদক সেবিরা আসে এইসকল এলাকায়। কেউ নদীর পাড়েই বসে মাদক সেবন করে। আবার কেউ কেউ মাদক ক্রয় করে নিজ গন্তব্যে চলে যায়। আর এই মাদক বিক্রির কাজে অল্প বয়সি তরুণদের ব্যবহার করছে মাদক কারবারীরা। তরুণদের কাজ হলো শহররক্ষা বাঁধের উপর মোবাইল হাতে পাহারা দেয়া, মাদকসেবিদের মাদক কারবারীর বাড়ি দেখিয়ে দেয়া। আর পুলিশ আসলে মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে মাদক কারবারীদের সাবধান করা। এ ভাবেই চলছে যুগ যুগ ধরে তাদের মাদকের কারবার। এই কাজের জন্য তরুণরা যা পাচ্ছে তা হলো ফ্রিতে মাদক সেবন আর হাত খরচের জন্য সামান্য কিছু নগদ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দুপুরে বোয়ালিয়া থানাধিন পঞ্চবটি শহররক্ষা বাঁধের দিকে মুখ করে বোয়ালিয়ার একটি পিকআপ ভ্যান রাখা হয়েছে। ভ্যানে দু‘জন পুলিশ বসে থেকে ঢুলছে। ভ্যানের কাছে গিয়ে পুলিশের নিকট দারোগা বাবু কোথায় জানতে চাইলে, তারা বলেন পাড়ার ভেতরে গেছে। সেখানে থাকা কয়েকজন স্থানীয় যুবক জানায়, আমাদের পঞ্চবটি এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকের কারবার চালাচ্ছে মুন্নি, কাননী, রিনা ও তার স্বামী সনেট, চুন্নুর ছেলে শাকিল, তসলিমা। এরা দিন রাত হেরোইন ইয়াবা গাঁজা ও ফেনসিডিল বিক্রি করে। কিন্তু পুলিশ তাদের ধরে না। মাদককারবারীদের সাথে অনেক পুলিশ কথাও বলে। আর মাদক কারবারীদের কাছে মাদক কিনে যাওয়ার পথে মাদকাশক্তদের ধরে মামলা দেয়। তারা আরও বলেন, মাদকাশক্তদের ধরে প্রশ্ন করলেই তো জানা যায় কার কাছে কিনলো মাদক। কিন্তু এমন কাজ পুলিশ করেনা। তাই এই এলাকা নোংড়াই থেকে গেলো। উঠতি বয়সি তরুণদের শতকরা ৯০ভাগই মাদকাশক্ত হয়ে পড়েছে।
একই চিত্র খরবোনা এলাকার: সেখানে রয়েছে মাদক কারবারী সিরাজুল-নাজমা দম্পত্তীর হেরোইন ও ইয়াবার কারবার, ডলি, নাদের-রোকশানা দম্পত্তী(গাঁজার পাইকারী ও খুচরা কারবার) আরমান ও জারমান দুই ভাই সকল মাদকের পাইকারী কারবারী, ডালিম পাইকারী মাদক কারবারী, নবাব-শাহানা দম্পত্তী হেরোইন, গাঁজা, রাকিব-লাবনী দম্পত্তী, ফেনসিডিল ও প্যাথেডিন, আরাফাত গাঁজা ব্যবসায়ী। তবে সে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও শহর রক্ষা বাঁধের উপর ভাংড়ির ব্যবসার আড়ালে মাদকের রমরমা কারবার চালাচ্ছে মাসুদা ও তার দুই ছেলে ইমু ও নাদু। পিছিয়ে নেই মাদক সম্্রাজ্ঞী শেফালী। এরা আবার সরাসরি কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসে রাজশাহীতে। বিক্রি করে পাইকারী ও খুচরা।
কেদুড় মোড় এলাকার মাদক কারবারী তসলিমা ও তার জামাই ড্যানির একক রাজত্ব। বিক্রি করে গাঁজা, ফেনসিডিল ও মরন নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট।
হাদির মোড় নদীর পাড় এলাকায় রয়েছে, মফি, বাদশা, সাদ্দাম, সুইট এরা নতুন হেরোইন কারবারী। এদিকে, তালাইমারী ২৫ নং ওয়ার্ডে টিপুর ছেলে শামীমের হেরোইন কারবারে তার একক রাজত্ব। স্থানীয়রা বলছে, প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরে থেকেই চলছে শামীমের হেরোইনের রমরমা কারবার।
সরেজমিন থেকে স্থানীয়দের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে যে সকল মাদক কারবারীদের নাম উল্লেখ করা করা হলো তারা প্রত্যেকেই একাধিক মাদক মামলার আসামী এবং নিজ নিজ এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারী। অথচো বোসপাড়া ফাঁড়ীর খুব কাছাকাছি স্থানে এসকল মাদক কারবারীদের অবস্থান ও বাসস্থান! এদের মাদক কারবার বন্ধ না হলে তরুণ ও যুবকরা ধ্বংসের দারপ্রান্তে বলেও জানায় স্থানীয়রা।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, মাদকের উপর বিশেষ অভিযান চলছে। আজও একজন মাদক কারবারীকে আটক করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকলকেই আটক করা হবে বলেও জানান ওসি।