শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন, শেরপুর :
শীত মানেই ভোজন প্রিয় বাঙালির পিঠা খাওয়ার মৌসুম। অগ্রহায়ণের নতুন ধানের চালের পিঠা না খেলে অসম্পূর্ণ থাকে বাঙালিয়ানা। একসময় শহর বা গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি হতো ভাপা, পুলি, চিতই ও তেলের পিঠাসহ বাহারি এবং নানা স্বাদের পিঠা। বাড়ি বাড়ি ধূম পড়তো পিঠা খাওয়া। তবে সম্প্রতি আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে ইউটিউব থেকে বাড়ির মা-বোনেরা নানা রেসিপি দেখে রেসিপি তৈরিতে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে দেশীয় সব পিঠা এখন আর বাসা বাড়িতে খুব একটা তৈরি হয় না। তবে এসব পিঠার কদর এখন ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে শেরপুর জেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে এসব পিঠার দোকান লক্ষ্য করা যায়। শুধু শহরের মোড়েই নয় শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লাতেও একশ্রেণির মানুষ এসব পিঠা তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। এসব পিঠার দোকানে ভিড় করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের নারী-পুরুষসহ নানা বয়স এবং নানা পেশার মানুষ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, শীত এলেই শেরপুরের একশ্রেণীর মৌসুমী ব্যবসায়ী শীতের নানান পিঠার দোকান দিয়ে বসেন। এসব দোকান শহরের প্রধান প্রধান মোড়ে বসেন। প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত এবং বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শীতের ভাপা পুলি, চিতই এবং স্থানীয় ভাষায় গোটা বা মুঠো পিঠা তৈরি করে বিক্রি করা হয়। এসব পিঠার দোকানে মাঝেমধ্যে এতো ভিড় হয় যে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করে পিঠা খেয়ে থাকেন । জানা গেছে, বাসা-বাড়িতে পিঠা বানানোর নানা ঝামেলার কারণে শহরের অনেক অভিজাত পরিবারের মানুষও এসব পিঠার দোকানে এসে গরম গরম পিঠা দাঁড়িয়ে থেকে খেয়ে এবং বাড়ির জন্য নিয়ে যান। এছাড়া সকালবেলা অনেক ছিন্নমূল এবং শ্রমজীবী মানুষ এসব পিঠা খেয়ে সকালের নাস্তার কাজ সারেন। এসব পিঠার মধ্যে ভাপা ও চিতই ১০ টাকায়, তেলের পিঠা এবং স্থানীয় ভাষায় মুঠো বা গোটা বা গরগরি পিঠা ৫ ও ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়। চিতই পিঠার সাথে দেওয়া হয় শুটকি ভর্তা, সরিষা বাটা ও ধনেপাতার ভর্তা। আর মুঠো পিঠায় বেগুন ভর্তা দেয়া হয়। তবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এসব পিঠার দোকান বসলেও সন্ধ্যার পর শহরের খরমপুর মোড়ের পিঠার দোকানে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায়।
এসব মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা শীতের ঠিক আগ থেকে শুরু করে এবং শীতের শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যবসা চালিয়ে যান। এতে তারা শীত মৌসুমে বাড়তি আয় করে থাকেন বলে জানান স্থানীয় পিঠা ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে খরমপুর মোড়ের ভাপা পিঠা ব্যবসায়ী হাতেম আলি জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত এবং আবার বিকেল থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করি। প্রতিদিন ১৫/১৬ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করা হয়। এতে প্রতিদিন ৭শ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত আয় হয় এবং এতে আমার সংসার ভালো ভাবেই চলে যায়। একই এলাকার চিতই পিঠা ব্যবসায়ী নিলু মিয়া জানায়, প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করে থাকি। এতে প্রায় হাজার টাকা আয় হয় আমার।