সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর:
কোমলপানীয়র প্লাস্টিকের ফেলে দেয়া বোতল দিয়ে বাড়ি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন শেরপুরের এক গ্রাম্য কবিরাজ সমশেদ আলী ওরফে ফক্কা। তার এই বোতল বাড়ি দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছে স্থানীয়রাসহ আশপাশের মানুষ। আবার কেউ কেউ মোবাইলে সেলফি বন্দি করে রাখছেন মুহুর্তগুলো।কোমলপানীয়র যে প্লাস্টিকের বোতলটি ফেলে দেয়া হয়, সেই বোতল দিয়েই তৈরি হয়েছে বাড়ি। আর্চায্য হলেও এমনই অভিনবভাবে বাড়িটি তৈরি করেছেন শেরপুর সদরের বাজিতখিলা ইউনিয়নের সুলতানপুর উত্তরপাড়া এলাকার সমশেদ আলী ওরফে ফক্কা কবিরাজ।
সরজমিনে বোতল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে ভীড় করছে স্থানীয় ও আশেপাশের লোকজন। আর অনেকেই মোবাইলে তুলছেন সেলফি। এটা নিয়ে মানুষের মাঝে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।বোতল বাড়ির মালিক সমশেদ আলী ওরফে ফক্কা কবিরাজের বলেন, এসব বোতল পরিবেশ দূষণ করে। আর আমি মোবাইলে দেখছি ইটের বদলে যে বোতল দিয়ে বাড়ি করা যায়। এতে খরচও অনেক কম। তাই আমার ইচ্ছে হলো বোতলের বাড়ি বানাবো। পরিবেশ বান্ধব এই বাড়িটি তৈরি করতে ভাঙ্গারির দোকান থেকে ৯মণ প্লাস্টিকের বিভিন্ন ধরণের বোতল সংগ্রহ করি। ১ মণ প্লাস্টিকের বোতলের দাম পড়েছে ১ হাজার টাকা। এতে ৯ মণ বোতল ৯ হাজার টাকা পরেছে। এরপর ওইসব বোতলে শ্রমিক দিয়ে বালু ও মাটি ভরি। পরে বালু ভর্তি বোতলগুলো সিমেন্টের সাহায্যে ধীরে ধীরে লাগিয়ে নির্মাণ করা হয় বাড়িটি। এই বাড়িটি তৈরি করতে সময় লাগে ২ মাস। আর ইট-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করলে খরচ হতো প্রায় ৪ লাখ টাকা, কিন্তু পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দিয়ে এই বাড়িটি খরচ হয়েছে অনেক কম। এতে সব মিলিয়ে আমার খরচ হয়েছে ১লাখ ২০হাজার টাকা। এতে খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি বাড়িটিও মজবুত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার বাড়িটি দেখতে অনেকেই আসছে। আর এই বাড়ি দেখে পাশের উপজেলায় ঝিনাইগাতীর পাইকুড়ায় আরও দুইজনের বাড়ির কাজ শুরু হয়েছে।
বাড়ি নির্মাণের শুরুর দিকে আশপাশের মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও এখন বাড়িটি নিয়ে বেশ গরতি স্বজন ও গ্রামবাসীরা।বোতল বাড়ির মালিক সমশেদ আলীর ভাই জমশেদ আলী বলেন, আমার ভাই যখন ঘরটি দেওয়া শুরু করে তখন মানুষ টিটকারি পারছে। ওই সময় বলছে সমশেদ পাগলা হছে বোতল দিয়ে কোনো সময় ঘর হবে৷ এহন ঘর তৈরি করারপর দুর-দুরান্ত মানুষ আসছে দেখছে। ভাগিনা জসিম বলেন, আমার মামা বোতল কিন্না ঘরডা দিছে খুব সুন্দর হইছে। আর মামার বাড়িত তো এহন মেলা আইতাছে ঘর দেখবার। বোতল বাড়ি দিয়া মামাতো পুরাই ভাইরাল হইয়া গেলো।অভিনব এই বাড়িটি দেখতে প্রতিদিনই আশপাশের মানুষ আসছেন এই বোতল বাড়িতে। আবার কেউ কেউ মোবাইলে সেলফি তুলে রাখছে। এ বাড়িটি নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই।পৌরসভার উত্তর গৌরীপুর থেকে আসা আব্দুল আজিজ বলেন, মানুষের কাছে শুনলান বাজিতখিলায় বোতল বাড়ি দিছে। পরে ভাবলাম এইডা আবার কেমন বাড়ি। তাই দেখতে আসলাম। দেখতে এসে দেখলাম ইটের বদলে বোতল দিয়ে ঘর দিছে এইটা দারুণ হইছে। আরেক দর্শনার্থী হাফিজুর বলেন, কলেজের বন্ধুদের কাছে শুনেছি বোতল বাড়ির কথা। এর আগে দেখি নাই তাই দেখতে আসলাম। বাড়িটি অনেক সুন্দর হয়েছে। একটি সেলফি তুলে রাখলাম।