বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এইচএমমোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জে দিগন্ত জুড়ে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ বিস্তীর্ণ এলাকা । পৌষের সকালের শিশিরে ভেজা ফসলের মাঠ হলুদ সরিষার ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে।সরিষার হলুদ ফুল যেন চাদরে মোড়ানো অপরুপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে। সরিষা ফুলের চারিপাশে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হচ্ছে যেমন মাঠ , তেমনি বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছে কৃষকেরা। প্রকৃতির রঙ বদলানো সোনালীর রুপে মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের মাঝে বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষসহ শিশুরা সেলফি তুলতে ছুটে আসছে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর, রায়গঞ্জ,উল্লাপাড়া, তাড়াশ,শাহজাদপুর,কামারখন্দ, বেলকুচিসহ সদরের বিভিন্ন কৃষি ক্ষেতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের মাঠ সরিষা চাষের জন্য বেশী উপযোগী। বর্ষার পানি নেমে যাবার সাথে সাথে সরিষার আবাদ করা হয় এতে ফলনও ভাল হয়।
সদরের রতনকান্দি, বাগবাটী, ছোনগাছা, বহুলী, শিয়ালকোল, সয়দাবাদ, কালিয়াহরিপুর,কাওয়াকোলা ও মেছড়াসহ জেলার ৯ টি উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন -এ বছর ৮৬ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। যদিও চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার হেক্টর।তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ বেড়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন -ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষার বাজার মুল্য প্রতি মন ৩ হাজার টাকা। সরিষার বাজার বেশী হওয়া ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কৃষকেরা সরিষা চাষাবাদ বেশী করছে। সরিষা চাষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি বিভাগ থেকে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে কৃষকদের মাঝে। এবারে সরিষার মধ্যে টরি-৭, বারি-১৪, বীনা-৯, বীনা-১৪ চাষাবাদ করা হয়েছে বেশি। সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের রানীগ্রাম, বয়ড়া, খলিশাকুড়া খিচুরীপাড়ার বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে সরিষার ফুলের সমারোহ ও বাম্পার ফলনের সম্ভবনায় কৃষকের মুখে হাসির ঝলক লক্ষ্য করা যাচ্ছে।খোকশাবাড়ির কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, আমাদের এলাকা যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রতি বছর জমিতে বন্যার পানি উঠে। কার্তিক মাসে জমি থেকে পানি নেমে যাবার সাথে সাথে সরিষার চাষ করা হয়। বন্যার পলি মাটিতে সরিষার আবাদে সবচেয়ে ভাল ফলন হয়। সরিষা চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। ভাল ফলন হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ হতে ৬ মন সরিষা উৎপাদন হয়। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি আয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সরিষা উৎপাদনে জমির উর্বরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষক লাভবান হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।এদিকে সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে মৌচাষীরা। জমিতে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স। সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মৌ চাষীরা এ মৌ বাক্স বসিয়েছে। এবার মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪’শ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ও মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।