সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে স্যালাইন খেয়ে জিম (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এবং এ স্যালাইন খেয়ে একই পরিবারের আরও ৪জন অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীমুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সোমবার ইফতারের পর খাবার স্যালাইন খেয়ে অসুস্থ হয়ে
জরুরি বিভাগে পাঁচজন রোগী আসে। এর মধ্যে জিম নামের এক শিশু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যায়। বাকি চারজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। নিহত শিশু জিম বেলকুচি উপজেলার বৈলগাছী গ্রামের কাইয়ুম উদ্দিনের মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করেছে। বাকি অসুস্থরা হলেন— নিহত শিশুর মা পারভীন খাতুন, বোন রিয়া, নূরী ও মিথিলা আকতার। তবে এদের মধ্যে পারভীন খাতুন ও রিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
বৈলগাছি উত্তরপাড়া গ্রামেরহেলাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ সাগর এসএমসি সহ বিভিন্ন কোম্পানীর স্যালাইন সরবরাহকারী সমেসপুর হাটপাড়া গ্রামের আকবরে ছেলে মোঃ হাফিজুল এবং স্থানীয় ভাবে প্রস্ত্তুতকৃত এএন ফুড বেভারেজ কেম্পানীর মালিক কলাগাছির মোহাম্মাদ আলীর ছেলে আনিছুর রহমান। এসময় দোকান ও কারখানা থেকে কয়েক কার্টুন এসএস সি কোম্পানীর ওর স্যালাইন এবং স্থানীয় ভাবে প্রস্ত্তুতকৃত এএন ফুড বেভারেজ কেম্পানীর টেস্টি এলাইন স্যালাইন এবং প্রমি কোম্পানী সফট ড্রিকংস উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়,সোমবার ইফতারিতে এসএমসির কোমাপানীর ওরস্যালাইন ও প্রমি কোম্পানীর পাউডার ও স্থানীয় এলাকায় প্রস্তুতকৃত টেস্টি এলাইন স্যালাইন গুলিয়ে ইফতার করেন পারভিন খাতুন। এসময় তার তিন সন্তান জিম, রিয়া, নুরি ও কাইয়ুম উদ্দিনের ভাতিজি মিথিলাও স্যালাইন পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালে নেয়ার পর জিমহা নামের তিন বছরের শিশুটিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং অবস্থার অবনতী হলে অসুস্থদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার্ড করেন। খবর পেয়ে বেলকুচি থানা পুলিশ আজ দুপুরে তারা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে এবং মালামাল গুলো উদ্ধার করে।
উদ্ধার বা জব্দ করা স্যালাইন গুলোর প্যাকেটের উৎপাদন ও মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ তারিখ স্পষ্ট না। তবে তাদের ধারণা স্থানীয় এলাকায় অবৈধভাবে ভাবে প্রস্তুতকৃত স্যালাইনগুলোর গুণগত মান ঠিক না থাকায় এ দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে বিষয়গুলো আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য তারা জব্দকৃত স্যালাইন ও পাউডার গুলো পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠাবে। আটককৃতদের নামে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দায়েরের পর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, সোমবার স্থানীয় একটি দোকান থেকে দুটি টেস্টি স্যালাইন নেয় নিহত শিশুর মা পারভীন খাতুন। পরে স্যালাইন দুটি পানিতে মিশিয়ে ইফতার করেন তারা। এ সময় মুড়ি ও খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি শিশুরাও স্যালাইনের পানি খায়। স্যালাইনের পানি খাওয়ার পরই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক তিন বছরের শিশু জিমকে মৃত ঘোষণা করেন।