মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ অপরাহ্ন

News Headline :
পাবনার সুজানগরে তেলের দোকানে আগুন আট দোকান ক্ষতিগ্রস্ত আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ ৫ জন র‌্যাবের অভিযানে সিরাজগঞ্জে বিপুল পরিমান হিরোইনসহ ২জন গ্রেফতার নওগাঁয় বিজিবি’র অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ আটক ৪ বিএসটিআই পাবনার অভিযানে ২লাখ টাকা জরিমানা তজুমদ্দিনে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে শাড়ির আঁচল পেঁচিয়ে গৃহবধুর মৃত্যু কুমারখালীতে বাড়িতে ঢুকে ৪জনকে কুপিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট নওগাঁয় ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে চালক ও হেলপার নিহত মান্দায় সতীহাট বাজারের রাস্তার কাজ পরিদর্শন করলেন ইউএনও হাবিপ্রবিতে এক্টিভেশন প্রোগ্রাম ফর ডিজিটাল স্কিলস ফর স্টুডেন্টস শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা তজুমদ্দিনে মাদকদ্রব্যসহ পাঁচজন আটক

১২ ঘন্টার মধ্যেই বিদেশী পিস্তলসহ ৪ অপহরণকারী গ্রেফতার ও ৩ ভিকটিমকে উদ্ধার

Reading Time: 3 minutes

কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহ র‌্যাব – ১৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান সকাল ১১:০০ ঘটিকায় আকুয়া বাইপাস র‌্যাব অফিস কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ জানান ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন স্কয়ার মাষ্টার বাড়ি এলাকা হতে বিদেশী পিস্তলসহ অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪, ময়মনসিংহ এবং অপহরণে ব্যবহৃত হায়েস মাইক্রোবাস সহ ত্রিপল ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১ম ভিকটিম রফিকুল তালুকদার (৩৬) মাংস ব্যবসায়ী (কসাই)। গতকাল ১ নভেম্বর বুধবার সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় । তিনি গতকাল টাঙ্গাইল জেলার ভুঞাপুর থানাস্থ গোবিন্দাস বাজারে নিজ দোকানে গরুর মাংস বিক্রি করিতেছিল। হঠাৎ একটি সাদা রংয়ের হায়েস মাইক্রোবাস ভিকটিমের দোকানের সামনে এসে থামে। উক্ত মাইক্রোবাস হইতে সিভিলে ৬/৭ জন লোক নেমে তারা নিজেদেরকে প্রথমে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে চোরাই গরুর মাংস বিক্রি করার অজুহাতে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য বলে। ভিকটিম তাদের সাথে যেতে না চাইলে আসামীরা ক্যাশ বাক্স হইতে নগদ অনুমান ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা সহ ভিকটিমকে জোরপূর্বক টেনে হেঁচড়ে তাদের মাইক্রোবাসে তোলে। ঐ সময় ০১ নং আসামী মো. রাসেল মাহাবুবুল নিজেকে র‌্যাবের মেজর পরিচয় দিয়ে ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং চিৎকার করলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তারা ভিকটিমের স্ত্রীকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। ১ম ভিকটিম সহ মাইক্রোবাস নিয়ে আসামীরা অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানাধীন নিমুরিয়া হাইস্কুলের সামনে আসিয়া পৌঁছাইলে ভিকটিম ২য় মো. আসাদুজ্জামানকে (বাংলালিংক কোম্পানীর সেলস্ ম্যান) মোটর সাইকেলসহ থামানোর জন্য সিগন্যাল দেয়, তখন ২য় ভিকটিম মোটরসাইকেল থামাইয়া দাড়ায়। মাইক্রোবাসে থাকা আসামীরা র‌্যাবের এবং ডিজিএফআই এর আইডি কার্ড দেখিয়ে ভিকটিমকে গাড়ীতে তোলে এবং উক্ত ভিকটিম এর কাছে থাকা মোটরসাইকেলটি একজন অপহরণকারী চালিয়ে নিয়ে যায়। উক্ত ভিকটিম আসাদুজ্জামানকে গাড়ীতে তোলার পর তাকেও আসামীরা অস্ত্রের ভয় দেখায় এবং এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম করে। উক্ত ভিকটিমের পরিবারের নিকট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দিন । ভিকটিম ২জনকে নিয়ে অনুমান ২.০০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানাধীন বাগান গ্রামের রাঙ্গামাটি এলাকায় ঢাকা টু ময়মনসিংহ গামী পাকা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৩য় ভিকটিম মো. হাফিজুল ইসলাম (মুদি দোকানের কর্মচারী) এর নিকট মাইক্রোবাসটি দাঁড়ায় এবং আসামীরা তাকে মাইক্রোবাসের কাছে ডাক দেয়। ৩য় ভিকটিম মো. হাফিজুল ইসলাম কাছে আসিলে ০১ নং আসামী নিজেকে র‌্যাবের মেজর পরিচয় দিয়ে উক্ত ভিকটিমকে জোরপূর্বক গাড়ীতে তুলে নেয়। একই কায়দায় মো. হাফিজুলকে হাত পা বেঁধে আসামী তাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। তার পকেট হইতে মালিকের দেয়া মুদি দোকানের মালামাল ক্রয় করা বাবদ নগদ ৪০,০০০/- হাজার টাকা তার শার্টের পকেট হইতে জোরপূর্বক বের করে নেয় এবং কথা বলতে নিষেধ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসামীরা মাইক্রোবাসটি নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে।
উক্ত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অধিনায়ক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে উপ-পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন এবং এএসপি মো. আব্দুল হাই চৌধুরী এর নেতৃত্বে র‌্যাব—১৪, ময়মনসিংহের একটি আভিযানিক দল গত ১ নভেম্বর বুধবার আনুমানিক ০৪.০০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন স্কয়ার মাষ্টার বাড়ী জামিরদিয়া মায়ের মসজিদ এর নিকট পলো স্টোর দোকানের সামনে থেকে আসামী ৪ অপহরণকারীদেরকে র‌্যাব -১৪ ময়মনসিংহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হল ১। রাসেল মাহাবুবুল রাসেল(৪৩), পিতা – মো. মজিবুর রহমান, গ্রাম – আমিনপুর, থানা – সিরাজগঞ্জ সদর, জেলা – সিরাজগঞ্জ, ২। মো. মনির হোসেন (৪০), পিতা – মৃত মো. আলী শেখ, গ্রাম – খানকা দালাল পাড়া, থানা – মুন্সিগঞ্জ সদর, জেলা – মুন্সিগঞ্জ, ৩। মো. মুছা শেখ (২৪), পিতা – মো. শাহাদাত হোসেন, গ্রাম – ছনগাছা গোপীরপাড়া, থানা – সিরাজগঞ্জ সদর, জেলা – সিরাজগঞ্জ, ৪। মো. সবুজ বিশ্বাস (২৪), পিতা মো. আতিয়ার বিশ্বাস, গ্রাম – কবিরপুর, থানা – শৈলকুপা, জেলা – ঝিনাইদহ।
ধৃত আসামীদের হেফাজত হতে ১ম ভিকটিম মো রফিকুল তালুকদার, ২য় ভিকটিম মো. আসাদুজ্জামান ও ৩য় ভিকটিম মো. হাফিজুল ইসলামদেরকে উদ্ধার করা হয়। আসামীদের হেফাজত হতে ৫ রাউন্ড গুলি সহ একটি বিদেশী পিস্তল, র‌্যাবের দুইটি ভুয়া আইডি কার্ড, ডিজিএফআই এর ভুয়া আইডি কার্ড, ৫টি বাটন মোবাইল ফোন, একটি সাদা রংয়ের হায়েস মাইক্রোবাস, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট সার্টিফিকেট, ফিটনেস সনদপত্র, একটি চাবি ও ছিনতাইকৃত ৬৬,৫৮৪/-(ছেষষ্টি হাজার পাঁচশত চুরাশি) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বেচ্ছায় উল্লেখিত ঘটনা অকপটে স্বীকার করে এবং আরো বলে যে, তাদের সহযোগী ৫ নং আসামী রানা ও ৬ নং আসামী মো জাহাঙ্গীর এবং অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে গিয়েছে। ধৃত আসামীরা আরও স্বীকার করে যে, তারা দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া ডিবি/ র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। ইতোপূর্বে আসামী রাসেল এর নামে অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪ টি মামলা এবং আসামী মনির এর নামে একটি মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই, ২০২৩ ময়মনসিংহের ভালুকায় বীকন গ্রুপের জনৈক কর্মচারী ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা নিয়ে অফিসে যাওয়ার সময় ১ নং আসামী রাসেল মাহাবুবুল রাসেল সহ ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ভিকটিমকে র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তোলে এবং পাঁচ লক্ষ টাকা ছিনতাইপূর্বক পাশবিক নির্যাতন করে ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়। গতকালকে ভিকটিম নিজেই অভিযানস্থলে আসামী রাসেলকে শনাক্ত করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com