রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর ব্যুরো :
@ চাষাবাদে বিরুপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা, @ কৃষকদের বাড়তি খরচ
@ নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভের পানির স্তর
চার মাসের বেশি সময় থেকে বৃষ্টির দেখা পাচ্ছে না রংপুর নগরীসহ এ অঞ্চলের মানুষ। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলের চাষাবাদে বিরুপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে খরার ঝুঁকিতে পড়েছে এই অঞ্চল। তবে রংপুর আবহাওয়া অফিস বলছেন, বৃষ্টি না হওয়া অস্বাভাবিক আবহাওয়া বলে মনে করছে। এ ধরনের আবহাওয়া সচারচর দেখা যায় না বলেও জানিয়েছে। এদিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বোরোসহ অন্যান্য আবাদ সেচ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। রংপুরসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য জেলায় কয়েক লাখ সেচ যন্ত্র দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে কৃষি উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আবাদি জমিও সেচ সংকটে পড়ছে। কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। ভূ-প্রকৃতি হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। এ বিষয়ে আইন থাকলে তা বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেই। এর ফলে হতাশ এ অঞ্চলের কৃষকসহ সচেতন মহল।
এছাড়া ধরলা, বক্ষ¥পূত্র, ধরলা, তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, যমুনেশ্বরী, যমুনাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর স্বাভাবিক পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি জানুয়ারি, ফেব্রæয়ারি ও মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের হার প্রায় শূন্যের কোঠায়। অথচ এর আগের বছর এই অঞ্চলে ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার, জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার ও ফেব্রæয়ারি ৮২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও এবার কোনো বৃষ্টি হয়নি। মার্চের প্রথম সপ্তাহ চলে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ধারণা করা হচ্ছে মার্চ মাসেও কাক্সিক্ষত বৃষ্টি নাও হতে পারে। খরা অনাবৃষ্টির কারণে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কৃষি ক্ষেত্রে। বাড়দি খরচের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগে পড়তে পারেন রংপুরসহ এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সূত্র মতে, উত্তরাঞ্চলের রংপুরের বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে পানির স্তর সবচেয়ে বেশি নিচে নেমে যায় এই সময়ে। শুকনো মৌসুমে এসব এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ ফুটের নিচে পানি পাওয়া যায় না। এসবের মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন। তথ্য মতে, খরার ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে,অপরিকল্পিতভাবে সেচযন্ত্র স্থাপনে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নতুন করে গভীর নলকূপ স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এব্যাপারে রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, চলতি সালে এই অঞ্চলে এলোমেলো আবহাওয়া বিরাজ করছে। খুব অল্প সময়ের জন্য শীত এসেছিল। অন্য বছর শীতের সময় বৃষ্টি হলেও এবারের প্রেক্ষাপট একেবারে ভিন্ন। বৃষ্টির অভাবে খরা পরিস্থিতি ৪ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত বিস্তৃত হতে চলেছে। অন্য সময় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত কিছু বৃষ্টি হলেও এবার বৃষ্টির পরিমাণ শূন্যের কোঠায়। এটাকে অস্বাভাবিক আবহাওয়া বলা যেতে পারে।