শুক্রবার, ২৬ Jul ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন

News Headline :
রনি শেখের পাবনা জেলা ছাত্রদলের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি পাবনা ঈশ্বরদীতে বলৎকারে ব্যার্থ হয়ে শিশুকে গলাটিপে হত্যা আটক ১ পাবনা সদর উপজেলা পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শিবপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদ্বোধন রাজশাহীতে কোরবানিযোগ্য পশু সাড়ে ৪ লাখের বেশি দাম চড়া হবে নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী পাবনার সুজানগরে আনারস প্রার্থীর ভোট না করায় মোটরসাইকেল সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর লুটপাট পাবনা গণপূর্ত অধিদপ্তর কয়েককোটি টাকার বিনিময়ে ২য় দরদাতা বালিশকান্ডের হোতাকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ র‌্যাব কুষ্টিয়া ক্যাম্প এর অভিযানে ১টি দেশীয় ওয়ান শুটারগান উদ্ধার গাজীপুরে তিন উপজেলায় নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা হলেন

ঐতিহাসিক রক্তাক্ত সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস- ১০০ বছর

Reading Time: 2 minutes

বার্তা বিভাগ, দৈনিক সারাবাংলা২৪ :
২৭ জানুয়ারী ঐতিহাসিক রক্তাক্ত সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস- ১০০ বছর পর একথা অনেকের কাছে নতুন ও বিস্ময়কর মনে হতে পারে! প্রতিবারই নীরবে পার হয়ে যায় ২৭ জানুয়ারি,শতবছর আগে এই বাংলাদেশে যে ভয়ংকর হত্যাকান্ড ঘটেছিল উপমহাদেশে কোন তুলনা নেই।
১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি,দিনটি ছিলো শুক্রবার। তৎকালিন পাবনা জেলার রায়গঞ্জ,তাড়াশ এবং উল্লাপাড়া থানার ত্রিমোহনী এলাকা বলে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী সলঙ্গা হাট। সলঙ্গা ছিলো এক বধিষু ব্যবসা কেন্দ্র,গোটা উওরবঙ্গের মধ্যে সলঙ্গা হাট ছিলো প্রধান। আশেপাশে বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন ধরণের পণ্যসামগ্রী, গবাদি পশু বেচাকেনার জন্য এই হাটে আনা হত।
হাটবারে সলঙ্গায় হাজার হাজার লোক সমাগত হত। হাটের অধিকাংশ দোকানের মালিক ছিলো মাড়োয়ারি ও বর্ণহিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিলেতী পণ্য সামগ্রী এবং মদ বর্জনের আন্দোলন চলছিলো এই হাটে। মুসলিম অধ্যূষিত এই এলাকায় কংগ্রেসের কর্মী তারুণ্যের অহংকার বিকাশমান প্রতিভা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ আন্দোলনের নেতৃত্বে দিচ্ছিলেন।
অহিংস-অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে সেদিন সলঙ্গার হাটে তিলঠাঁই পর্যন্ত ছিল না। লোকে লোকারণ্য,হাজার হাজার মানুষ এই ছোট্ট হাটে জড়ো হয়েছে স্বাধিকার চেতনায়। আন্দোলনে উত্তাল উত্তরবঙ্গের সুবিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্র সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা হাটে বৃটিশবাহিনী সেদিন ইতিহাসের বর্বরতম হামলা চালায়। গণহারে হত্যা করে হাজার-হাজার মানুষ। সেদিন অগণিত লাশের গণকবর দেয়া হয় রহমতগঞ্জে। যদিও কাগজে-কলমে সাড়ে চার হাজার মানুষের আনুমানিক হিসেব পাওয়া যায়, কিন্তু আদতে নাকি সলঙ্গা হাটে সেদিন দশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল বৃটিশবাহিনী। স্বাধিকার চেতনায় উজ্জ্বীবিত হবার দায়ে একসঙ্গে এত মানুষ হত্যার ঘটনা ইতিহাসে বিরল। বৃটিশদের এই হত্যাযজ্ঞ সেই সময়ের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম বলেই চিহ্নিত আজও।
সেদিন সলঙ্গার হাটে মুক্তিকামী মানুষের নেতৃত্বে ছিলেন ২২ বছরের এক যুবক। এই যুবকটির নাম আব্দুর রশিদ। সেদিনের সেই কিশোর নেতাই পরে জাতীয় নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ উপাধিতে ভূষিত হন। সেদিন তিনি সলঙ্গা হাটে বিদেশি পণ্য বর্জনের আন্দোলনে নেতৃত্বের জন্য বৃটিশবাহিনীর চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্দি হন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের রক্তসিঁড়ি সলঙ্গা বিদ্রোহের মহানায়ক, ঋণসালিশী বোর্ড প্রবর্তনের পথিকৃৎ,বর্গা আন্দোলনের অবিসংবাদিত কাণ্ডারি, দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অকুতোভয় যোদ্ধা এই মহান নেতা, আজীবন গণমানুষের নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের তার অমর স্মৃতির প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।
রক্তাক্ত সলঙ্গা বিদ্রোহের শত বর্ষ পেরিয়ে গেলেও পায়নি সরকারি স্বীকৃতি, সরকারি ভাবে পালন করা হয়না দিবসটি।তরুন প্রজন্মদের জানানোর জন্য পাঠ্যপুস্তকের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়নি।নির্মিত হয়নি শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা।মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের স্মৃতি বিজোড়িত সলঙ্গা থানাকে পৌরসভা ও উপজেলায় রুপান্তর আজও হয়নি। জাতি হিসাবে আমরা সত্যিই বড়ই অকৃতঘ্ন।
আজীবন গণমানুষের নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের অমর স্মৃতির প্রতি-
ইতিহাস – ঐতিহ্যে সলঙ্গা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 DailySaraBangla24
Design & Developed BY Hostitbd.Com