শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
কামরুল হাসান, মহম্মদপুর মাগুরা :
এই রাস্তাডার এমন কাম করছে তা আর মানুষের কাছে কওয়ার কায়দা নাই। বৃষ্টির আগে এই রাস্তায় মাটি দিয়ে শেষ করে দেছে। এহন কেমন করে যাব। পাউডা হাটু পর্যন্তু গাইরে যাচ্ছে। কথাগুলো বলেন মাথায় পাটের বোঁঝা নিয়ে হেঁটে যাওয়া কৃষক হাবিবুর রহমান। ক্ষেত থেকে পাট কেটে বাড়ির পাশের ডোবায় নেওয়ার সময় কাদা পানির রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে অনেক কষ্টো হচ্ছিল তারা। তার দাবি, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বছর বছর মাটি দিলেও ইট সলিংয়ের ব্যবস্থা করেন না স্থানীয় মেম্বর চেয়ারম্যানরা। মহম্মদপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এরকম শতাধিক কাঁচা সড়ক রয়েছে যা বর্ষা মৌসুমে একেবারেই চলা চলের অনুপোযাগী।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী বাজার থেকে চালিমিয়া আর্দশপাড়া মসজিদের সংযুক্ত সড়কের আধা কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি দীর্ঘদিন সংষ্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সড়কটি দেখলে মনে হবে ধান চাষের উপযোগী জমি। গুরুত্ব বিবেচনায় ওই কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ একর জমির কৃষি কাজের যাতায়াতে করতে ব্যবহার করেন স্থানীয় কৃষকরা। রাস্তার দুই পাশে রয়েছে শত শত একর উর্বর কৃষি জমি। ভ্যান ও ঘোড়ার গাড়িতে কৃষিপণ্য ধান,পাট কেটে আনার কাজে ওই সড়ক ব্যবহার করেন এলকার কৃষকরা। এই সড়কটির ওপর নির্ভর করে আশপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পরিবার। প্রায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে তারা। পঁচা কাঁদা পায়ে নিয়ে হাট, বাজার, স্কুল, কলেজে যাওয়া আসা করে এসব এলাকার মানুষ। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা ইটের সলিং করে দিতে চাইলেও রহস্যজনক কারণে উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগ নিত্যদিনের পড়েছে এই সড়কটির ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠা অনেক পরিবার ও সহস্রাধীক কৃষক।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষায় কাঁচা রাস্তার পুরো অংশে কাঁদা পানিতে আচ্ছন্ন। ফলে ওই সড়কে চলাচলকারী পথচারি কৃষকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। দেখা হয়, কয়েকজন কৃষক পাট মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তারা জানান, রাস্তায় চলাচলের সময় অনেক কষ্ট করতে হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনিচ্ছা ও গাফিলতির কারনে রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়না বলে এ সময় তারা অভিযোগ করেন।
চালিমিয়া গ্রামের রাশেদ কাজী বলেন, এ সড়কটির যেন কোন অভিভাবক নেই। হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ হলেও দায়িত্বশীলরা কেউই এর গুরুত্ব বুঝতে চান না তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আসেন শুধু ভোটের সময়। কার্পেটিং নয়, ইটের রাস্তা করে দেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
ওই সড়কের বাড়ি মালিক হারেজ মোল্যা বলেন, শুকনো মৌসুমে এ সড়কটি দিয়ে স্থানীয়রা চলাচল করে কৃষি কাজ করতে পারেন কিন্তু বর্ষার সময় পায়ে হেঁটে চলাচল অসম্ভব। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পড়েছে সড়কটি। এক রকম গৃহবন্দি হয়েছে এলকার মানুষ। তিনি অভিযোগ করেন, সড়কটির উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে একাধিকবার আবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
বাবুখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর সাজ্জাদ আলী বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় ১৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ করেছি। আরো ১০ কিলোমিটার মত বাকি। ওই এলাকার কৃষকদের অসুভিধার কথা চিন্তা করে চলমান অর্থ বছরে ওই রাস্তাটি ইটের সলিং করার পরিকল্পনা আছে। মহম্মদপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সাদ্দাম হুসাইন বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। তবে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় মিটিংএ তুলে ধরবো।