বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ন

News Headline :
হোসেনপুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ ইট বৃষ্টির মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে দৌড়ালেন শ্যামনগরের ইউএনও রণী খাতুন পাবনা ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডায় ৩ ইটভাটায় অভিযান ২ লাখ টাকা জরিমানা এবার রাজশাহীর বাগানগুলোতে ফুটছে আগাম আমের মুকুল সাংবাদিক কল্যাণ তহবিলের বাৎসরিক ফ্যামিলি ডে পালিত জব্দ ট্রাক ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী! ২০ হাজার টাকা দেওয়ায় হয়রানীর অভিযোগ গোদাগাড়ী থানার ওসি’র বিরুদ্ধে রাবি ক্যাম্পাসে মাথায় ব্যাডের আঘাতে রাজশাহী কলেজে শিক্ষার্থীর মৃত্যু! ভোলাহাটে জরিমানা করা সত্বেও ফের মাটিকাটার কাজ অব্যাহত!! রাজশাহীর পবায় ট্রাক চাপায় যুবদলকর্মী নিহত বদলগাছীতে নবাগত ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

নওগাঁয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা রাতে বসে নেশার আসর

Reading Time: 2 minutes

নুরুজ্জামান লিটন, নওগাঁ :
নওগাঁর সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে চালু করা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। যারা কেন্দ্রটির দায়িত্বে আছেন তাদেরও বাড়তি চাপ পোহাতে হচ্ছে। কেন্দ্রটিতে নিরাপত্তা বেষ্টনি না থাকায় চত্বরে নিয়মিত বসছে মাদকের আড্ডা। ফলে দ্রুত জনবল নিয়োগসহ নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, বর্ষাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পদসংখ্যা পাঁচটি- সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি), ফার্মাসিস্ট, অফিস সহায়ক ও আয়া। এর মধ্যে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও অফিস সহায়ক কর্মরত রয়েছেন। ২০১৬ সাল থেকে স্যাকমো, ১৯ বছর ধরে ফার্মাসিস্ট এবং এক বছর ধরে আয়ার পদ শূন্য রয়েছে। এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এফডব্লিউভি ফিরোজা আক্তার বানু নিজের পদসহ স্যাকমো ও ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব পালন করছেন। আর অফিস সহায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নিজেরসহ আয়ার দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন প্রায় শতাধিক মানুষ এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন. স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে স্যাকমো না থাকায় মাসে চারদিন স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ থাকে। এ চারদিন এফডব্লিউভি ফিরোজা আক্তার বানু বিভিন্ন এলাকায় স্যাটেলাইট (গর্ভবর্তী ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবায় আলোচনা) সেবা দিয়ে থাকেন। এদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সেবা নিতে এসে ফিরে যান রোগীরা। এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একটি ওটি লাইট ছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সেসময় ব্যাটারির সাহায্যে লাইটটি জ্বালানো হতো। ২০১৫ সালে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওটি লাইটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ায় এখন টর্চ লাইট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফিরোজা বানু। আশির দশকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু হলেও নেই চারিদিকের নিরাপত্তা বেষ্টনি। কাঁটাতার দিয়ে কিছুটা ঘিরে রাখা হলেও মরিচায় নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। দায়িত্বরত এফডব্লিউভি ভয়ে তাদের কিছু বলতে পারেন না। স্থানীয় বাসিন্দা আতোয়ার রহমান ও মিজানুর বলেন, এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিশেষ করে গর্ভবর্তী ও শিশুরা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়ায় চিকিৎসা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি এফডব্লিউভি মাঠে এবং কেন্দ্রে বসে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তিনি যখন মাঠে যান সেদিন রোগীরা সেবা পান না। এছাড়া নিরাপত্তা বেষ্টনি না থাকায় সন্ধ্যার পর স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে বসে মাদকের আড্ডা। চিকিৎসাসেবা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনবল নিয়োগসহ নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরির দাবি জানান তারা এফডব্লিউভি ফিরোজা আক্তার বানু বলেন, প্রায় ১৯ বছর ধরে এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাকরি করছি। আসার পর থেকেই দেখছি ফার্মাসিস্ট নেই। গত পাঁচ বছর থেকে নেই স্যাকমো। নিজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এ দুটোর দায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ জন চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। মাসে চার দিন মাঠে থাকায় ওইদিনগুলোতে কেন্দ্রে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হয়না। রোগীদের এসে ফিরে যেতে হয়। অতিরিক্ত চাপ পড়ায় মানসিক বিষন্নতা ও কাজ বিরক্ত লাগে। একার পক্ষে কাজ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করি। এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনি না থাকায় প্রতিদিন মাদকসেবীরা সন্ধ্যার পর জানালার পাশে ও টয়লেটের হাউসের ওপর বসে গাঁজা সেবন করেন। গাঁজার তীব্র গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে যাই। তাদের অনেকবার নিষেধ করার পরও কোন কাজ হয়না। গরু-ছাগল এসেও নোংরা করে। কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণ ও জনবল শূন্যের বিষয়টি অনেকবার অবগত করা হয়েছে। অফিস সহায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, জনবল কম থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষ্কার পরিচ্ছনতা নিজেকেই করতে হচ্ছে। আয়ার কাজটাও করতে হয়। নওগাঁ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি আমরা বিভিন্ন সময় কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। এছাড়া নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণের বিষয়টি হেলথ ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ দেখেন। তারপরও কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণে একটা তালিকা করে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com