বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ সাইমুম আনাম সাজিদ, ঢাকাঃ
বেঁচে থাকার তাগিদে পানি পান করা অত্যাবশ্যক।কথায় আছে পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু সেই পানিই যদি জীবনের জন্য শঙ্কা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে অবস্থার পরিনতি কেমন হতে পারে তা বলা বাহুল্য।
হ্যাঁ এমনই এক প্রতিষ্ঠান এর কথা বলছিলাম। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার বিবেচনায় দেশের বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ সরকারি তিতুমীর কলেজ। প্রায় ষাট(৬০) হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের বিদ্যাপীঠবাক্যের । সকালের সোনালী রোদ্দুর একটু মিষ্টি হতে না হতেই বেরিয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা একঝাঁক শিক্ষার্থীরা। বেলা একটু বাড়তেই ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের আনাগোনায়। সবমিলিয়ে মনোমুগ্ধকর এক পরিবেশ বিরাজমান সরকারি তিতুমীর কলেজে।
কিন্তু সমস্যার বাঁধ বেধেছে অন্য স্থানে। এত বড় প্রতিষ্ঠান অথচ শিক্ষার্থীরা সুপেয় পানির সঙ্কটে ভুগছেন। গ্রীষ্মের এই কাঠফাটা রোদের তীব্র গরমের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা যানযট উপেক্ষা করে ক্লাস করতে এসে তৃষ্ণা নিবারনের জন্য যেতে হচ্ছে মহাসড়ক অতিক্রম করে কোনো রেস্টুরেন্টে বা টঙ্গের কোনো দোকানে। ছেলেদের জন্য বিষয়টা কিছুটা সহজ হলেও মেয়েদের জন্য দুর্ভোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।বিকল্প ব্যবস্থায় কিনেই খেতে হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি।
জানা যায় কলেজের কিছু কিছু সেমিনার কক্ষে পানি পিউরিফাইং ফিল্টার থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। তাছাড়া ফিল্টারগুলোর কিট যথাসময়ে পরিবর্তন করা হয় না।যার জন্য ফিল্টার থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার বদলে অস্বাস্থ্যকর পানি বের হচ্ছে।যা পান করা শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।যার দরুন বিভিন্ন রকম পানিবাহিত রোগ সৃষ্টি হচ্ছে।এ বিষয় নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রায়হান ‘দৈনিক সারা বাংলা ২৪ ‘ প্রতিনিধিতে বলেন, “মিরপুর ১ থেকে অনেক যানযট উপেক্ষা করে কলেজে আসেন ক্লাস করার জন্য। প্রচন্ড গরমে হাসফাস হয়ে যখন পানির তৃষ্ণা অনুভব করেন ছুটে যান সেমিনারের পানির ফিল্টারের কাছে। কিন্তু পান মতো সুপেয় পানি খুঁজে পান না। সেমিনার কক্ষের পানি পিউরিফাইং ফিল্টারটা বহুদিন যাবৎ অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সেমিনার কক্ষে আরও একটি পানি পিউরিফাইং ফিল্টার আছে কিন্তু সেটা থেকে পানি আসে না বললেই চলে। ২৫০ মি.লি এর একটা বোতল পূর্ণ করতে প্রায় ৫ মিনিটের মতো লেগেছে। যা খুবই বিরক্তিকর এবং সময়সাপেক্ষ কাজ।
ইংরেজি বিভাগের অন্য আরেকজন শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত সাব্বির জানান, সে নারায়ণগঞ্জ থেকে নিয়মিত ক্লাস করতে আসে। গত বৃহস্পতিবার সুপেয় পানির জন্য সারা ক্যাম্পাস ঘুরেও পানি না পেয়ে বাধ্য হয়েই দোকান থেকে ১৫ টাকা মূল্যের এক বোতল মিনারেল ওয়াটার কিনে পান করেন।
আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরাও সুপেয় পানির সল্পতায় ভুগছেন। এ নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি, মোঃ রিপন মিয়ার ভাষ্যমতে,“ বিশুদ্ধ পানি সঙ্কটের বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত।ইতিমধ্যে আমরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধানে সর্বদা তৎপর ছিলাম। শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে পানির তীব্র সঙ্কট দূর করা হবে।”
পানি সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ তালাত সুলতানা ‘ দৈনিক সারাবাংলা ২৪’ প্রতিনিধিকে জানান, “আমাদের আমন্ত্রণে ওয়াশার দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ কলেজে আসেন। তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে অতিদ্রুত পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে এবং বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সেমিনার কক্ষগুলোতে পানি বিশুদ্ধ করণ ফিল্টার নতুন করে স্থাপন কিংবা সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের পানির সঙ্কট নিরসন করা হবে।”