শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আবুল হাশেম রাজশাহী :
রাজশাহীর বাঘায় বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের সবাই। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আশঙ্কাজনক হারে জ্বরের রোগী বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের মাঝে করোনা ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা রোগীর সংখ্যাও। করোনা আক্রান্তের ভয়ে অনেকে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বাড়িতে গোপনে নিজের মতো করে ঔষধ কিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় শত-শত মানুষের প্রান গেলেও স্বাস্থ্য বিধি মানতে উদাসীন সাধারণ মানুষ। ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাঘা উপজেলায় ঘরে-ঘরে সর্দি-কাসি ঢুকে গেলেও ভয়ে করোনা পরিক্ষা করাতে আসছে না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এই এলাকার সাধারন জনগন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আলহাজ্ব মোঃশাহরিয়ার আলম নিজ অর্থায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে পালস অক্সিমিটার এবং অক্সিজেন-থেকে শুরু করে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা যন্ত্রাংশ প্রদান করেছেন জনসাধারণের জন্য। এখন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকলেও করোনার আতংকে সেবা নিতে আসছে না অনেকে। এতে করে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা-সহ সমাজের সচেতন মহল। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই মুহুর্তে সারাদেশে করোনার যে পরিস্থিতি তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে ভারতীয় সীমান্তবর্তী রাজশাহী অঞ্চল। এর মধ্যে চাপাইনবাবগঞ্জ, গোদাগাড়ি, নঁওগা, নাটোর এবং চারঘাট-বাঘায় এর ভয়াবহতা লক্ষ করা গেছে সবচেয়ে বেশি। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সূত্রে, রাজশাহীতে একদিনে গত (২৯ জুন) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে সর্বচ্চ ২৫ জন। এদিকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা গছে, গত বছরের ৬ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত বাঘায় করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে দেড় হাজার মানুষের । এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৯০ জন। এদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছে। আবার কেউ-কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাঘায় গত ৭ দিনে ৩৯৫ জনের করোনা পরীক্ষা করা হলে পজেটিভ ধরা পড়েছে ১০৫ জনের। আবার অনেকেই উপসর্গ বোঝার পরেও নমুনা পরীক্ষা করছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন খোদ চিকিৎসকরা-সহ সমাজের সচেতন মহল। তাঁদের মতে করোনা পরীক্ষার জন্য জনসচেতনতা খুবই প্রয়োজন। একজন মানুষের শারিরীক অবস্থা বুঝে নিজ উদ্যোগে করোনা পরীক্ষা করা উচিত। কিন্তু বাস্তবে সেটি হচ্ছেনা। ফলে মহামারি করোনায় প্রতিদিন রাজশাহী অঞ্চল সহ দেশব্যাপী আক্রান্ত হচ্ছে হাজার-হাজার মানুষ। ডাক্তারদের মতে, এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম। যার কালো থাবায় আজ টালমাটাল সারা পৃথিবী। মহামারি এই করোনার কাছে ধনী-গরীব, ছোট-বড় সবাই যেন অপরাধী। সবাইকে আক্রমন করছে এই রোগ। যার ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না দুগ্ধ শিশু থেকে শুরু করে আবাল-বৃদ্ধ বনিতা। জনগনকে সচেতন করতে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার জন্য প্রতিনিয়ত মাইকিং সহ নিয়মিত টহল দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। তবে ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাঘা উপজেলা হওয়ায় অনেকের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর ফলে করোনার উপসর্গ জ্বর,সর্দি,কাশি এবং গলা ব্যাথা নিয়ে অনেকে বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিলেও তারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা পরিক্ষা করতে আগ্রহী হচ্ছেনা। বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: রাশেদ আহমেদ বলেন, তুলনা মূলক ভাবে এখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জনসাধারণকে এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। একই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলকে মাস্ক পরিধান করা সহ প্রয়োজন ছাড়া কোন ভাবেই ঘরের বাইরে না আসার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর সীমান্তবর্তী উপজেলা (চারঘাট-বাঘা) এখান থেকে নির্বাচিত সাংসদ সদস্য বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মোঃ শাহরিয়ার আলম স্যার নিজেস্ব অর্থায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডাক্তারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্র সহ রুগীদের জন্য ৩০ টি পালস অক্সিমিটার দিয়েছেন। এই যন্ত্রটির কাজ হলো-রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও হৃদস্পন্দনের গতি নির্ণয় করা। এ ছাড়াও জরুরী রুগীদের জন্য তিনি ১০ টি বড়-বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করেছেন। তার মতে, করোনা রুগীদের চিকিৎসার জন্য বর্তমানে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ককমপ্লেক্সে সব রকম ব্যবস্থা আছে। এখন শুধু প্রয়োজন এটি পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য জনসচেতনা।