বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শরিফ মিয়া, জামালপুর:
জামালপুরের ইসলামপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্রী সুমন তালুকদার বলেছেন, ‘সন্তানের জন্মের পর থেকে তাকে লালন-পালনের জন্য বাবা-মা যে ত্যাগ স্বীকার করেন, তার ঋণ কখনও শোধ হওয়ার নয়। তবে প্রাপ্ত বয়স হওয়ার পর অনেক সন্তানই তা ভুলে যায়।
বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে অনেক সন্তান বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন বা ভোরণপোষণ দিতে চান না। আমি দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করছি যে, বাবা-মাকে ভরণপোষণ না করা সন্তানদের জায়গায় হবে কারাগারে। যেসব সন্তান বাবা-মাকে ভরণপোষণ করবে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইসলামপুর থানা মোড় বটতলা চত্বরে অটোরিকশা চালকদের যাত্রীবহনে সতর্কীকরণ পথসভায় হ্যান্ড মাইকে
বাবা-মায়ের অবাধ্য সন্তানদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওসি। ওসি সুমন তালুকদার আরও বলেন, ‘বাবা-মা আমাদের যেমন ভরণপোষণ করে বড় করেছেন। এখন বৃদ্ধা বয়সে বাবা-মাকে ভরণপোষণ করতে হবে আমাদের। বাবা-মায়ের ভরণপোষণ সন্তানের অত্যাবশ্যক করণীয়। বাবা-মা হচ্ছেন, সন্তানের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।
সেকরণেই সর্বাবস্থায় বাবা-মাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা করতে হবে। বাবা-মায়ের সেবাতে কোনো ধরনের আপত্তি থাকবার কথা নয়। কেননা, বাবা-মায়ের খুশিতে সন্তানের মঙ্গল।’
গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগষ্ট) ইসলামপুর থানায় যোগদানকারী ওসি সুমন তালুকদার বলেন, ‘পিতামাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে বাবা-মা অবশ্যই ভরণপোষণ লাভের আইনি অধিকার লাভ করেছেন, যা ক্ষুণ্ন হলে যে কোনো মা-বাবা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। এ আইনে ভরণপোষণ বলতে খাওয়া-দাওয়া, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বসবাসের সুবিধা এবং সঙ্গ প্রদানকে বোঝানো হয়েছে। এ আইনে প্রত্যেক সন্তানকে বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। একাধিক সন্তান থাকলে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পৃথকভাবে বসবাস করলেও মা-বাবার সঙ্গে সন্তানরা নিয়মিতভাবে দেখা-সাক্ষাৎ করবেন ও ভরণপোষণ দেবেন। ভরণপোষণে স্ত্রী বা অন্য কেউ বাধা দিলে তিনি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।’ অটোরিকশা চালকদের যাত্রীবহনে সচেতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ওসি সুমন তালুকদার ওই পথসভায় বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে চালকদের সচেতন হতে হবে। দূরদূরান্ত যাত্রীবহনে একটু সচেতন হলেই খুব সহজে বড় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। দূরে কোথাও যাত্রী কিংবা মালামাল আনা-নেওয়াকালে যাত্রীদের পরিচয় জেনে নিতে হবে। গন্তব্যের ঠিকানা জেনে নেওয়াসহ পরিচিত অন্যান্য চালককে জানিয়ে দূরে কোথায় যাওয়া দরকার। যাতে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে, সহজেই সনাক্ত করা যাবে। চালক-যাত্রী সচেতন হলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন আমাদের সকলের সচেতনতা। চালকরা সচেতনতার সঙ্গে যানবাহন চালাতে হবে। কেননা সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’
অনুষ্ঠিত ওই পথসভায় অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান মোড়ল, এসআই রফিকুল ইসলাম, এসআই মাসউদুর রহমান, এসআই দেলোয়ার হোসেন, এসআই তাজুল ইসলাম এবং এএসআই খোকন মিয়া। পথসভায় শতাধিক অটোরিকশা চালক অংশ নেন।