শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

News Headline :
সিরাজগঞ্জে ইজিবাইক চালককে হত্যা করে গাড়ি ছিনতাই আটক দুই কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার পাবনা জেলার ১৯৬তম জন্মদিন উপলক্ষে কাগজে গ্রাফিতি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বাজারের আগুন: ত্রিশালের কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য আকাশছোঁয়া বিপাকে সাধারণ মানুষ কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সতর্ক বার্তা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে ৪টি হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী গ্রেফতার নওগাঁ সোসাইটির নীতিমালা ভঙ্গ করে প্রতিপক্ষের ঘর দখলের অভিযোগ অপরাধী ও দুষ্টু লোকদের স্থান বিএনপিতে হবে না বলে তারেক রহমান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন: কেন্দ্রীয় যুবদল সম্পাদক নয়ন পাবনায় সংবাদ প্রকাশের জেরে ওসির ইন্ধনে সাংবাদিকের খোজে সন্ত্রাসীরা মতিহারে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী সোহেল গ্রেফতার

কৃষি জমিতে পোকা-মাকড় দমনে আলোক ফাঁদ

Reading Time: 2 minutes

আঃ খালেক মন্ডল,গাইবান্ধা:
কৃষি জমিতে পোকা-মাকড় দমনে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আলোক ফাঁদ। পোকা-মাকড় দমনে মাত্রাহীন পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার জীববৈচিত্র্য-পরিবেশ-পশুপাখি ও মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রোপা আমন ধান রক্ষা করতে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কৃষকরা আলোক ফাঁদের মতো পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে। যা ধানের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে সাহায্য করছে। ফলে এক দিকে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে ক্ষতিকর কীটনাশক থেকে পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাচ্ছে।উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আলোক ফাঁদ ধানসহ অন্যান্য ফসলে পোকা দমনের একটি পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি। এ পদ্ধতিতে সন্ধ্যা পর ধানক্ষেত হতে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোণাকার করে মাটিতে পুঁতে মাথার অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হয়। এরপর মাটি থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট উপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে খুঁটির তিন মাথার সংযোগস্থলে রশির সাহায্যে ঝুঁলিয়ে দিতে হয়। এর নিচে একটি বড় আকারের প্লাস্টিকের গামলা বা পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর মাঠ জুড়ে যখন অন্ধকার নেমে আসতে শুরু করে তখন আলোক ফাঁদের আলোর ঝলকে আকৃষ্ট হয়ে ধানক্ষেতের বিভিন্ন পোকামাকড় ওই পাত্রে চলে আসে। ইদানিং ধানক্ষেতে বৈদ্যুতিক বাল্বের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এভাবে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ধান ফসলের মাঠে ক্ষতিকর এবং উপকারী পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশ বান্ধব।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ধানের ক্ষতিকর এবং উপকারী পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ বছর রোপা আমন ধানে আলোক ফাঁদ স্থাপনের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে এ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার আওতাধীন ২৭টি বøকের বিভিন্ন জায়গায় ইতোমধ্যে আমন ধানক্ষেতের পাশে বৈদ্যুতিক বা সৌর বিদ্যুতের আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। স্ব-স্ব বøকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে নিয়ে আলোক ফাঁদ স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের ফলিয়া বøকের কাতুলী গ্রামের রুবেল মিয়া, আজাদুল ইসলাম, ওবায়দুল হক ও স্বপন মিয়া জানান, ধানক্ষেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহারের মাধ্যমে উপকারী এবং ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি চিহ্নিত করে ক্ষতিকর পোকা দমন করা সহজ হয়েছে। এ পদ্ধতিতে আমরা আগের চেয়ে কম খরচে ক্ষতিকর পোকা দমন করে ফসল রক্ষা করতে পারছি। আবার উপকারী পোকাও বাঁচাতে পারছি। এতে করে আমাদের উৎপাদন খরচ কমছে।উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোছা. নাজমা সিদ্দিকা বলেন, আমার বøকের বিভিন্ন জায়গায় কৃষকদের নিয়ে আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রম ইতোমধ্যে প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ ফাঁদের মাধ্যমে ধানের জমিতে বর্তমানে কী কী ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড় রয়েছে তা শনাক্ত করে ক্ষতিকারক পোকা দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধানের জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করতে আলোক ফাঁদের বিকল্প নেই।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফাতেমা কাওসার মিশু বলেন, বিভিন্ন বøকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করে পোকা শনাক্ত করে সে অনুযায়ী উঠান সভা, দলীয় আলোচনা ও মোবাইলে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে। এ উপজেলায় ২৭টি কৃষি বøক রয়েছে। এরমধ্যে প্রতিটি বøকের বিপরীতে ১০টি আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। নিবিড় পরিদর্শন ও পরামর্শ অব্যাহত রেখে ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে আনার বিষয়ে কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা সর্বদা নিয়োজিত আছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com