admin
- ৩ জুন, ২০২৩ / ৫৯ Time View
Reading Time: 2 minutes
মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার, ধুনট বগুড়া :
ডালপুরি, আলুপুরি, কিমা পুরি শেষ সংযোজন খেতাপুরি। ঢাকার মিরপুরে একজায়গায় লেখাটি দেখে কৌতুহল বসত এগিয়ে গেলাম। অনেকে রাগ করে একজন আরেকজনের খেতা পোড়েন। এরকম কিছু নয়তো! ভাবছি আর এগোচ্ছি। অবশেষে কথা হলো দোকানের স্বত্বাধিকারী মিরাজুল ইসলাম মিরাজের সাথে।
ব্যাক্তিগত কাজে বগুড়া থেকে ঢাকার মিরপুর দশ নম্বর ঝুট পট্টি বিদ্যুৎ অফিসের পশ্চিম দক্ষিণ দিকে যেতেই হটাৎ লেখাটি চোখে পড়ল। দোকানে বেশ লোকজনের সরগরম। কেউবা দাঁড়িয়ে, কেউবা ভেতরে বসে খাচ্ছে। কাছে যেয়ে খেতাপুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই এগিয়ে আসলেন ষাটোর্ধ একজন। বললেন এটা এক ধরনের পুরি। ইচ্ছে হলো খেয়ে দেখি। কিন্তু ভিড়ের কারনে সুযোগ হলো না। পরে ভিড় কমলে আসবো বলে আত্মীয়ের বাসায় চলে এলাম। পরের দিন সকালে যেয়ে দেখি খেতাপুরি নেই, বিকেলে হবে। হাস্যজ্বল মিরাজুল বললেন। কথায় কথায় মিরাজুলের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠলে জিজ্ঞেস করলাম খেতাপুরির ইতিহাস কি। মিরাজুল বললেন পাঁচসাত বছর আগে তাদের পুর্বপুরুষের বাড়ি পুরানো ঢাকায় এই খেতাপুরির সাথে তার প্রথম পরিচয়। সেখান থেকে শিখে মিরপুরে এসে এনামে এই ব্যাবসা শুরু। প্রথমে এর চাহিদা ও আকর্ষণ দেখে মিরাজুল আশার আলো দেখেছিলেন স্বাবলম্বী হবার। তখন লোকজন লাইন ধরে, কখনো টোকেন কেটে এই খেতাপুরি নিতো। এখন অনেক দোকান হয়েছে, ব্যাবসা গেছে কমে। বিশেষ করে করোনা একেবারে নাজেহাল করেছে তাকে। চার ছেলে চার মেয়ের সংসার তার। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। বড় ছেলেটি আলাদা থাকে। ছোট তিন ছেলেকে সাথে নিয়ে তার এই খেতাপুরির ব্যাবসা। এখন আর এক খেতাপুরি দিয়ে চলেনা। সাথে অন্যান্য আইটেমও বানাতে হয়। সকাল থেকে চারটা পর্যন্ত সকালের নাস্তা সহ অন্যান্য জিনিস বিক্রি হয়। শুধু বিকেলে চারটার দিকে এই খেতাপুরির আয়োজন। আগে প্রতিদিন পনের বিশ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এখন আট দশ হাজার টাকা। খেতাপুরির বিশেষত জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য পুরি বেলুন দিয়ে ডলে তেলে ভাজা হয় এবং শক্ত হয়। কিন্তু খেতাপুরি – খেতা সেলাই এর মতো করে হাতের তালুতে টিপে টিপে বানাতে হয়, ফলে নরম হয় ও পুরির গায়ে কোনো তেল থেকে যায় না। মসল্লার পরিমান খুব দক্ষতার সাথে নজর রাখতে হয়। শুধু তাই নয় এর সাথে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে তেঁতুলের চাটনি। এই তেঁতুলের চাটনির উপর নির্ভর করে ক্রেতার চাহিদার পরিমাণ। পাচ টাকায় বিক্রি হয় প্রতিটি খেতাপুরি, যা বর্তমানে দ্রব্য মূল্যে বৃদ্ধির ফলে লাভবান হওয়া কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। মিরপুরে মিরাজুল দ্বিতীয় অবস্থানে এই খেতা পুরির ব্যাবসা। শুধু মিরপুরেই নয় – ঢাকাতেও তার অবস্থান দ্বিতীয় ছিলো। এখন দুর্দিন। স্বাবলম্বী হতে এসে হলোনা স্বাবলম্বিতা।