মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার,ধুনট বগুড়া:
বগুড়া জেলার ধুনটে এক কিশোরী মাদ্রাসার ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী চেষ্টার অভিযোগ দেওয়ার দুই দিন পরেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। তদন্তের নামে অগ্যাত কারনে আসামীকে পালিয়ে যাওয়ার সহযোগীতার অভিযোগ তুলেছে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পিতা । ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের চালাপাড়া গ্রামে।
নির্যাতনের স্বীকার ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার ১১ বছরের মেয়ে স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। সে ইতিমধ্যেই ১৮ পারা কোরআন হেফজ করেছে। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে ৪/৫ দিন আগে বাড়িতে এসেছে। ১৪ মে শনিবার দুপুরে প্রতিবেশী ওসমানগনির ছেলে দুই সন্তানের জনক গেদা আকন্দ আমার অবুঝ মেয়েকে আম খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে তার ঘরের ভিতর নিয়ে যায়। এরপর গেদা আকন্দ আমার মেয়েকে জোরপুর্বক জাপটে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়া শ্লীলতাহানী এবং ধর্ষন করার চেষ্টা করে। এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে। আসামী গেদা আকন্দ কেটে পড়ে। এঘটনায় শনিবার দুপুরে ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। আমি ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করে আসামীকে গ্রেফতারের জন্য অনুরোধ করি। ওসি আমার অবুঝ মেয়ের নিকট থেকে ঘটনার বিবরন শোনার পর তিনি অভিযোগটি রেকর্ডভুক্ত না করে এস আই মতিউর রহমানকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। এস আই মতিউর রহমান ওই দিন বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে সরেজমিনে তদন্ত করতে আসেন। স্থানীয় লোকজন ও আমার মেয়েকে আসামীর রোষানল থেকে উদ্ধার করা স্বাক্ষীরাও স্বাক্ষ্য দেন। এরপর এস আই মতিউর রহমান আসামী গেদা আকন্দকে তার ঘরের ভিতর ডেকে নিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট গোপন আতাত করে অগ্যাত কারনে গ্রেফতার না করে আসামীকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করেন। আমি নিরুপায় হয়ে সন্ধ্যায় স্থানীয় গন্যমান্য লোকজন নিয়ে থানায় গিয়ে বিষয়টি ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে জানাই এবং আমার মেয়ের শ্লীলতাহানী ও ধর্ষন চেষ্টার আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য আবারও অনুরোধ করি। কিন্ত ওসি আমার অনুরোধ টুকুও রক্ষা করেন নি। ওই ছাত্রীর বাবা আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে রবিবার সকাল থেকে এলাকার বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হই। অবশেষে ধুনট উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মহসিন আলমকে জানাইলে তিনি সংবাদ কর্মীদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করার পরামর্শ দেন। আমি সাংবাদিকদের জানাইলে রবিবার দুপুরে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের নিকট কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান। এরপর পুলিশের টনক নড়ে এবং ধুনট থানার ওসি তদন্ত রাজ্জাকুল ইসলাম সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন। এবিষয়ে এস আই মতিউর রহমান তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা রেকর্ড না হওয়ায় আসামী গ্রেফতারের কোন আইন নাই তাই আমি আসামী গ্রেফতার না করে শুধু তদন্ত করেছি। বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য আমি ওসি স্যারকে জানিয়েছি। ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এস আই মতিউর রহমান কি করেছে তা আমার জানা নাই। তবে মাদ্রাসার ছাত্রীর শ্লীনতাহানী ও ধর্ষনের চেষ্টার বিষয়টি মামলা রেকর্ড করার জন্য বিভিন্ন মহলের তদবির থাকায় অধিকতর তদন্তের জন্য ওসি তদন্ত রাজ্জাকুল ইসলামকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি তদন্ত রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, রবিবার সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে । আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি চলছে।