বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার,বগুড়া:
বগুড়া জেলার ধুনট , অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় শ্বাসরোধ করে হত্যার তেইশ দিন পর মায়ের ঘরে পুতে রাখা মর্জিনা খাতুন (২৪) নামে স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে ধুনট থানা পুলিশ । শনিবার ২২ জুলাই বিকেল প্রায় ৩.৩০ এর সময় থানা পুলিশ উপজেলার চান্দারপাড়া গ্রামে মায়ের ঘরের মেঝে খুড়ে মর্জিনা খাতুন এর লাশ উদ্ধার করেন ।নিহত মর্জিনা খাতুন চান্দারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের মেয়ে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত মর্জিনার মা রওশনারা বেগমকে (৫৫) আটক করেছে।থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মা রওশনারা, ছেলে রাব্বি ইসলাম (২০) ও ছেলে বউ নুপুর খাতুনকে (১৮) নিয়ে মর্জিনার একান্ন পরিবারভুক্ত সংসার ছিলো। সহায় সম্বল বলতে মাথা গোঁজার সামান্য বসতভিটা। তাদের চার সদস্যর অভাব অনটনের সংসার চলতো। জীবিকার তাগিদে তারা নানান অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি রওশনারার অসুস্থতার কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। তার পক্ষে আর অনৈতিক কাজ করা সম্ভব হয় না। এতে পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।এ বিষয় নিয়ে প্রায় চার মাস ধরে তাদের সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে মর্জিনাকে ফের অনৈনিক কাজের জন্য চাপ দেয় ওর মা। কিন্ত রাজি না হলে ৩ মাস আগে মর্জিনাকে তারা মারপিট করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে মর্জিনা। পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার চাপ সৃষ্টি করলেও মর্জিনা রাজি হয় নাই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩০ জুন মর্জিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তার মা, ছেলে ও ছেলে বউ। এরপর মর্জিনার মৃতদেহ রওশনারার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।এ অবস্থায় হত্যাকান্ডের পরের দিন ঘরে তালা লাগিয়ে রওশনারা, রাব্বি ও নুপুর বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়। হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন নিরুদ্দেশ হওয়ায় গ্রামবাসীর মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ হলে আজ শনিবার সকালে নিহত মর্জিনার মাকে ঢাকা থেকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে রওশনারার দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী মর্জিনার লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। ঘটনার পর নিহতের ছেলে রাব্বি ইসলাম ও ছেলে বউ নুপুর খাতুন পলাতক রয়েছে।ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম, গ্রামবাসীর দেওয়া তথ্যমতে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। নিহত মর্জিনার মা রওশনারাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তা শারীরিক অসুস্থ থাকাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তাকে সাথে নিয়ে মর্জিনার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।