বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে ধষর্ণকারী ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী আসামী ও সহযোগী স্ত্রী-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেনছে র্যাব। এ সময় ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রæয়ারি) রাত সাড়ে ৭টায় মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা মহল্লাস্থ ৩নং রোডের বাসা নং-৫০৪৩ পদ্মা আবাসিক এলাকার জনৈক মোঃ সাব্বির সুলতান (৫০), পিতা-সুলতান আহমেদের পাঁচতলা বাড়ীর নিচ তলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আলমগীর ওরফে রয়েলের কাছ থেকে ৩টি ১০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, ৫টি মোবাইল ফোন, ৪টি সীম, ৩টি বিভিন্ন চেক বই, হেলেনা খাতুনের নিজ নামীয় ২টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো: মোঃ আলমগীর রয়েল (৪০), সে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার হেঁতেম খাঁ (সবজিপাড়া) এলাকার নরুল ইসলামের ছেলে, হেলেনা খাতুন (৩০), সে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার নামা ভদ্রা এলাকার মোঃ নায়েব আলীর মেয়ে ও মোঃ আলমগীর অরফে রয়েলের স্ত্রী, দিলারা বেগম (৩৫), সে একই এলাকার মোঃ নায়েব আলী মেয়ে ও আলমগীরের স্ত্রী, মোছাঃ মমতাজ বেগম (৪২), সে একই থানার উপর ভদ্রা এলাকার মৃত মনু হোসেনের মেয়ে ও মোঃ আফজাল হোসেনের স্ত্রী। শনিবার র্যাব-৫, রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, গত (৭ ফেব্রæয়ারী) দুপুর সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী নারী বাড়ী থেকে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে রাজশাহী কোর্টস্টেশন এলাকায় আসে। কেনাকাটার একপর্যায়ে সে দেখতে পায় তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। ওই সময় মোবাইল ফোনটি খোঁজা-খুঁজি করার সময় পূর্ব পরিচিত আলমগীর ওরফে রয়েল তাকে জিজ্ঞাসা করে, কিছু হারিয়ে গেছে নাকি ? ভুক্তভোগী নারী জানায়, তার মোবাইল ফোনটি খুঁজে পাচ্ছে না। তখন প্রায় দুপুর ২টা। তার হারানো মোবাইল ফোন পাইয়ে দিবে বলে একটি অটোতে উঠিয়ে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষামান অন্যান্য সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে রয়েল ভুক্তভোগীকে মোবাইল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যান্য সহযোগীদের সগযোগীতায় উল্লেখিত বসতবাড়ীর ভিতর নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক আটক করে এবং একপর্যায়ে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে জোির পূর্বক হাত দেয়। পরে রয়েল তাকে তার শয়ন কক্ষে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগীকে ধর্ষণকালে আসামী হেলেনা খাতুন, আসামী দিলারা বেগম আসামী মোছাঃ মমতাজ বেগম গোপনে ভিডিও ধারণ করে। এরপর তারা ধর্ষণের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হমকি দিয়ে ভুক্তভোগীকে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ৩টি ১০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং রুমে জোরপূর্বক আটকে রাখে।
পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে এবং আসামীদের গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের জানা যায়, প্রধান আসামী রয়েল সকলের সহযোগিতায় অপহরণ করে প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দাবী করার বিষয়টি স্বিকার করে। আরো জানা যায়, প্রধান আসামী আলমগীর ওরফে রয়েল কজন প্রতারক ও বøাকমেইলকারী। সে এবং তার স্ত্রী ও শালিকারা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন মহিলা ও পুরুষদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে, ভুল বুঝিয়ে উল্লিখিত ভাড়া বাড়ীতে গোপনে নিয়ে এসে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যকলাপ এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করে আসছে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবী করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে আসছে। গ্রেফতার রয়েলের নামে ইতিপূর্বে নারী ও শিশু আইনে ১টি মামলা চলমান রয়েছে।
এ ব্যপারে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।