admin
- ৮ জানুয়ারী, ২০২৩ / ১৫৩ Time View
Reading Time: 2 minutes
মাহবুব খান, শিবপুর নরসিংদী :
নরসিংদী জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। জেলার গ্রামের ফসলের মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে সবুজের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় নরসিংদীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুকেছেন। সরিষা তোলার পর একই জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে। সরিষা বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো হয়। তবে বেলে বা দো-আঁশ মাটিতেও সরিষা হয়।সেদিক থেকে এই অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষে খুবই উপযোগী বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় ৫ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ২০৪ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। চলতি সরিষা মৌসুমে নরসিংদী জেলায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৫৮০”হেক্টর জমিতে। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে জেলায় সরিষার চাষাবাদ হয়। সেই উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন। সরিষা নরসিংদী জেলার সব উপজেলায় কমবেশী উৎপাদন হয়। তবে জেলার নরসিংদী সদর ও রায়পুরা এই দুই উপজেলায় অন্য চারটি উপজেলার চেয়ে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী জমিতে সরিষা উৎপাদন হয়।
সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর , পলাশ ৯৫ হেক্টর, শিবপুর ১৬৩ হেক্টর, মনোহরদী ২৬৫ হেক্টর, বেলাব ২২১ হেক্টর ও রায়পুরায় এক হাজার ৬ হেক্টর ৬৯০ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের সমারহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার ক্ষেত। এসময় চাষিরা জানান, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে কোন কোন ক্ষেতে সরিষার দানা বাধতে শুরু করেছে। আবার কোথাও ফুল ফুঠেছে। সদর উপজেলার আলিপুরা গ্রামের সরিষা চাষি জামাল মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫ শত টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মন। প্রতিমন সরিষার বাজার মূল্য ৮শ থেকে ৯শ টাকা।
রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ গ্রামের চাষি হযরত আলী বলেন,এবার প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে বারী ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি বাম্পার ফলনের আশা করছি।
শিবপুর উপজেলার ঘাশিরদিয়া গ্রামের সোলেমান জানান,সরিষা চাষে তেমন খরচ হয়না,অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।গত বছরের চেয়ে এবার ভালো ফলনের আশা করছি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. মো. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যে ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত ইতি বাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের আরও একটি সাফল্য। দেশি জাতের সরিষার ৬০ থেকে ৭০ দিনে এবং উচ্চ ফলন শীল জাতের সরিষা উঠতে সময় লাগে ৭৫ থেকে ৮০ দিন। তিনি আরও বলেন, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানী নির্ভরতা কমে যাবে।