শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
ইমরান ইসলাম,নওগাঁ:
শস্য খ্যাত বরেন্দ্রভূমি নওগাঁর নিয়ামতপুরে কৃষি জমিতে বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে হেলিপ্যাড নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। যে জমিতে বছরে তিনটি ফসল উৎপাদনে সক্ষম চাষিরা সেখানে হেলিপ্যাড নির্মাণ করায় স্থানীয় কৃষকেরা চরম আতঙ্কে রয়েছে। শুধু তাই নয় এখন কৃষকেরা জমি বেদখল হওয়ার শঙ্কায় ভুগছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহারাজপুর, কুতুবপুর, পীরপুর ও কোঁচপাড়া মৌজা এবং রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর ও মানপুর মৌজার প্রায় ৩৫০ বিঘা (৩৩ শতাংশে বিঘা) কৃষি জমিতে প্রকল্প গ্রহণের নামে কৃষকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বেনামে (আমমোক্তার) দলিল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বসুন্ধরা গ্রুপের নামে। এখন এলাকার কৃষকেরা তাদের ভুল বুঝতে পেয়ে জমি ফিরেয়ে নিতে মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ঠিক তখনই বসুন্ধরার উদ্যোগে সেই জমিতে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই ৬ মৌজায় শ্রেণিভিত্তিক জমিতে আমন, আউস, বোরো, সরিষা, গম উৎপাদন হয়। ৬০ ভাগ জমিতে তিন ফসল ও ৪০ ভাগ জমিতে দুই ফসল উৎপাদন হয়।কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা শান্তিতে নিজ জমিতে ধান, গম, সরিষা চাষ করতাম। বাপ দাদার আমলে বিদ্যুৎ না থাকায় সেচ পাম্প ছিল না। বাপ দাদার আমলে আমাগো জমিতে একটি মাত্র ফসল হত। এখন সরকার বিদ্যুৎ দিয়েছে, সেচ পাম্পের সাহায্যে আমরা ওই জমিতেই তিনটি ফসল ফলাতে সক্ষম হচ্ছি। কিন্তু সেই জমিতেই শকুনের ছাড়া পড়েছে। আমাদের একটাই দাবি আমাদের জমি ফেরত চায়।কৃষক রুবেল বলেন, আমাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাপ দাদার সম্পত্তি নিতে চায় তারা। আমাদের এখন ভুল ভেঙে গেছে। আমাদের জমি ফেরত পেতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। তারা জমিতে হেলিপ্যাড নির্মাণ করেছে। আমরা বাপ দাদার সম্পত্তি ফেরত চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কৃষক বলেন, কুতুবপুর মৌজার জমিতে হেলিপ্যাড তৈরি করেছে। আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি সেই কারণে জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে। তিন ফসলী জমি নষ্ট করে শিল্প কারখানা যেন গড়ে না উঠে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।নিয়ামতপুর উপজেলায় বসুন্ধরা গ্রুপের দায়িত্বে থাকা জাকির হোসেন বলেন, উধ্বর্তন কর্মকর্তা আসবে বলে অস্থায়ী ভাবে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছিল। আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতাম। আমাদের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা মনে হয় আসবে না। হালকা ঢালাই দিয়ে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছিল খুব শ্রীঘ্রই সরিয়ে নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছি। প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়া জমিগুলো ক্রয় বিক্রয় বন্ধ আছে।এ প্রসঙ্গে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমতিয়াজ মোরশেদ বলেন, সাধারণ কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রশাসন কৃষকদের পাশে থাকবে। অনুমতি ছাড়া কৃষি জমিতে তারা কিভাবে হেলিপ্যাড নির্মাণ করে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।