বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগরীতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পিংকু-সহ গ্রেফতার ৮ জুড়ীতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে আটক ৮ পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ কর্মী মানিক হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি গ্রেফতার গোবিন্দগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ২৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রংপুর বিএনপি ও আহবায়ক সামুর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে অপপ্রচারের অভিযোগ মামলার বাদির নালিতাবাড়ীতে ভারতীয় মদসহ যুবক আটক কুষ্টিয়ার নিখোজ ২ এএসআই এর লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার এবার প্রকাশ্যে এলেন ইবি শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি গোদাগাড়ীতে বিপুল পরিমান গাঁজা-সহ গ্রেফতার মাদক কারবারী ডালিম আমরণ অনশনে রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা

পক্ষাঘাতগ্রস্থদের সমাজভিত্তিক পুনর্বাসনে অকুপেশনাল থেরাপি

Reading Time: 2 minutes

মুরাদ হোসেন,হাবিপ্রবি :
সেন্টার ফর দ্যা রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্যা প্যারালাইজড (পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র- সিআরপি) এর একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশন্স ইনস্টিটিউট (বিএইচপিআই) এর অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগের প্রভাষক খাদিজা আক্তার লিলি এবং মো. সাদ্দাম হোসেনের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় বর্ষের চব্বিশজন শিক্ষার্থী যারা অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিউনিটি বেসড রিহ্যাবিলিটেশন (সিবিআর) প্লেসমেন্ট সম্পন্ন করতে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলায় চিকিৎসা কার্যক্রম এ মাসে সম্পন্ন করেছেন। অকুপেশনাল থেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধকতায় শিকার এমন ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ত্রিশাল উপজেলার নয়টি গ্রামের (অলহরি, জয়দা, দুর্গাপুর, নিজবাখাইল, কোনাবাখাইল, খাঁগাটি, কালাইপাড়, লাঙ্গল- শিমুল এবং ঘুঘুরারচালা) প্রত্যেক বাড়িতে শিক্ষার্থীরা তিন দিন ব্যাপী জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন করে। কার্যক্রমে সহযোগিতা করে বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সলিউশন পয়েন্ট। গ্রামগুলোর প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন করে তারা প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধকতায় শিকার প্রায় ৩৩২ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সনাক্ত করেন। তন্মধ্যে ৪৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ শতাংশ মহিলা। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী তাদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ শারীরিকভাবে অক্ষম, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ২ দশমিক ৭ শতাংশ, বাক প্রতিবন্ধী ১ দশমিক ২ শতাংশ, দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী ২ দশমিক ৪ শতাংশ, ডাউন সিনড্রোম ০ দশমিক ৯ শতাংশ, সেরিব্রাল পালসি ৬ দশমিক ০ শতাংশ, মানসিক প্রতিবন্ধী ৫ দশমিক ১ শতাংশ, বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং একাধিক প্রতিবন্ধকতার শিকার ৬ দশমিক ০ শতাংশ। তাদের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, প্রতি চৌদ্দজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র একজন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ছিলেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে তারা পঁচিশজন প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধকতায় শিকার ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে বিনামূল্যে অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। অকুপেশনাল থেরাপির পাশাপাশি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন ও পরনির্ভরশীলতা দূর করার জন্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে বিভিন্ন স্থানীয় সম্পদ ( যেমন: বাঁশ, কাঠ, প্লাস্টিক ইত্যাদি) ব্যবহার করে তৈরি করেন সহায়ক যন্ত্র (যেমন: স্প্লিন্ট, সাপোর্টিভ সিটিং, প্যারালাল বার, মডিফাইড এডিএল’স ইকুইপমেন্ট, ওয়াকিং ফ্রেম, মডিফাইড সিটিং চেয়ার ইত্যাদি) এবং রোগীর প্রয়োজন অনুসারে পরিবেশগত পরিবর্তন (যেমন: র‍্যাম্প, টয়লেট মডিফিকেশন, হোম এন্ড ওয়ার্কপ্লেস মডিফিকেশন ইত্যাদি) করেন।
এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ঘিরে সামাজিক বাধা (কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা, খারাপ আচরণ ইত্যাদি) দূরীকরণ ও প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের উপায় এবং তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে অবগত করার জন্য শাহাবুদ্দীন ডিগ্রি কলেজ, বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সলিউশন পয়েন্ট-এ দুটি সচেতনাতামূলক প্রোগ্রাম এবং কোনাবাখাইল, কালাইপাড় ও দূর্গাপুর গ্রামে তিনটি উঠান বৈঠক সহ মোট পাঁচটি সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজন করা হয়, যেখানে অকুপেশনাল থেরাপি এবং পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশন্স ইনস্টিটিউট (বিএইচপিআই) -এর অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগের প্রভাষক খাদিজা আক্তার লিলি জানান, “ WFOT-এর মতে, অকুপেশনাল থেরাপি একটি বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা যা একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সমস্যা দূরীকরণের মাধ্যমে তাকে দৈনন্দিন কাজে যথাসম্ভব স্বর্নিভর করার লক্ষ্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত, বাংলাদেশে ৪০৮ জন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমাদের দেশে ৬৪ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মাত্র একজন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট রয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম”।
আরেকজন প্রভাষক মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আমাদের দেশে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে দেশের প্রতিটি প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিকে জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে, এজন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঠিক পুনর্বাসন সেবা নিশ্চিত করে, তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কর্মক্ষম করে গড়ে তুলতে অকুপেশনাল থেরাপির কোনো বিকল্প নেই।” বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সলিউশন পয়েন্টের ডিরেক্টর প্রিন্সিপাল শহিদুল ইসলাম বলেন, “ ত্রিশাল উপজেলায় এমন হাজারো ব্যক্তি আছেন যারা বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার। শুধুমাত্র ত্রিশালে নয় সমগ্র দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজে সর্বোচ্চভাবে সক্ষম করে গড়ে তুলতে অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বলেই আমি মনে করি।”

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com